বৈরী আবহাওয়ায় দুবলারচরের জেলেপল্লীতে কোটি টাকার মাছ নষ্ট
চলতি ডিসেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরে মাছের অভাবের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই জেলেদের নতুন এক সংকটে পড়তে হয়েছে। কয়েকদিনের জন্য জালে মাছ ধরা পড়লেও, বৈরী আবহাওয়া ও প্রবল বৃষ্টির কারণে মাছ শুকাতে না পারায় কোটি টাকার মাছ নষ্ট হয়েছে। এই অপ্রত্যাশিত কারণে জেলে মহাজনরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জেলেদের মতে, সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় “ফিনজাল” এই দুর্যোগের অন্যতম কারণ হতে পারে। কেননা ঘূর্ণিঝড়ের পর সাগরের জলস্তর বেড়ে যাওয়া এবং জলের লবণাক্ততার পরিবর্তন মাছের প্রজনন ও চলাচলে প্রভাব ফেলতে পারে।
দুবলার আলোরকোলের রামপাল জেলে সমিতির সভাপতি মোতাসিম ফরাজী বলেন, চলতি মাসের প্রথম দিক থেকে দুই সপ্তাহ যাবৎ সাগরে জাল ফেলে আশানুরূপ মাছ পাওয়া যায়নি। ২/৩ ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে সাগরের গভীরে গিয়ে জাল ফেলেও তেমন মাছ পাওয়া যায়নি। ট্রলারের তেল খরচের টাকাও উঠেনি। গত ২৫/৩০ বছরের মধ্যে দুবলার শুঁটকি জেলেরা এমন মাছ সংকটে পড়েনি বলে তিনি জানান। সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় “ফিনজালের” কারণে এরূপ পরিস্থিতি হতে পারে বলে জেলেদের ধারণা।
শেলারচরের শুঁটকি জেলে মোঃ সোলায়মান বলেন, ৪০/৫০ বছর যাবৎ সাগরে মাছ ধরে তিনি শেলারচরে মাছ শুঁটকি করেন। কিন্তু এবারের মতো মাছ সংকট তিনি কখনো দেখেননি বলে মন্তব্য করেন।
দুবলা ফিসারমেন গ্রুপের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ কামাল উদ্দিন আহমেদ আজ রবিবার(২২ ডিসেম্বর) দুপুরে বলেন, চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে জেলেরা নামমাত্র মাছ পেয়েছে। তৃতীয় সপ্তাহে আশানুরূপ মাছ পাওয়া গেলেও গত বৃহস্পতিবার সমুদ্র উত্তাল থাকায় জেলেরা মাছ নিয়ে নিরাপদের জন্য চরে ফিরে আসে। শুক্র ও শনিবার মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও বৃষ্টির কারণে লইট্যা ও প্লোফাসিয়া নরম মাছ হওয়ায় রোদ ও বাতাস না থাকার কারণে মাছে পোকা হয়ে যাওয়ায় প্রায় এক কোটি টাকার মাছ ফেলে দিতে হয়েছে। আজ রবিবার থেকে আবহাওয়া ভালো হলেও এখন গোন শেষের দিকে হওয়ায় জেলেরা সাগরে নামেনি। পরবর্তী গোনে নামবে। তাতে আরও পঞ্চাশ লাখ টাকার ক্ষতি হবে।
চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ দুবলার শুঁটকি জেলেরা সাগরে মাছ না পওয়ার ফলে জেলে ও মহাজনরা বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ওই সময় চরে মাছ শুকানোর খোলা ও মাচা মাছের অভাবে খা খা করছিল।
জেলে পল্লি দুবলা ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ খলিলুর রহমান ও শেলারচর ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেষ্টার দিলীপ মজুমদার বলেন, শুঁটকি জেলেরা সাগরে মাছ না পাওয়ায় তাদের রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments