সাতক্ষীরায় এক আমদানিকারকের ২৩ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার নেতৃত্বেই সংঘটিত হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আটককৃত মো. মেহেদি হোসেন ওরফে মুন্না। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম সুজাতা আমিনের আদালতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তিনি এই জবানবন্দি দেন। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তির বিষয়টি সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামিনুল হক নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সাতক্ষীরা-ভোমরা সড়কের আলিপুর ঢালীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরদিন শুক্রবার এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় ওই নেতাসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে।
এ ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার ছিনতাইকারীদের মাস্টারমাইন্ড সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুজ্জামান রফিক ছিনতাই করা টাকার ব্যাগ নিয়ে নিজেই মোটরসাইকেল চালিয়ে যান বলে জানা যায়।
ভোমরা বন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী জানান, ১৯ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা শহরের দুটি ব্যাংক থেকে ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা উত্তোলন করে তাঁর প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মো. শওকাত আলী ও মো. ওবায়দুল্লাহ মোটরসাইকেলে ভোমরায় আসছিলেন। এই টাকা ভারত থেকে আমদানি করা আদা, পেঁয়াজ ও পাথরের কর পরিশোধ করার জন্য ভোমরা সোনালী ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা ছিল। পথে সাতক্ষীরা-ভোমরা মহাসড়কে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে পাঁচ সদস্যের একটি দল পিছু নেয় তাঁদের। ওই দুর্বৃত্তরা ঢালিপাড়া এলাকায় গতিরোধ করে মারধর করে ছিনিয়ে নেয় টাকার ব্যাগ। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে চারজন টাকা নিয়ে পালিয়ে গেলেও শওকাত ও ওবায়দুল্লাহর চিৎকারে আশপাশের লোকজন মো. মেহেদি হোসেন নামের একজন ছিনতাইকারীকে আটক করেন। পরে মেহেদিকে পুলিশে দেন জনতা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদ বলেন, টাকা ছিনতাইয়ের সঙ্গে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রফিকুজ্জামান জড়িত হওয়ায় তাঁকে দল থেকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি শামিনুল হক বলেন, এ ঘটনায় আমির হামজা বাদী হয়ে ১৯ ডিসেম্বর রাতে চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা করেছেন। আসামিদের মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার মো. মেহেদি হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. রফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার ও টাকা উদ্ধারে পাঁচটি দল মাঠে কাজ করছে উল্লেখ করে ওসি আরও বলেন, দ্রুত ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করার জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments