৫ বছরেও পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি সুঘাট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাটে প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি দীর্ঘ ৫ বছর আগে নির্মাণ হলেও তা পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। পুরোপুরি জনবল নিয়োগ না হওয়ায় গ্রামের নারী ও শিশুরা জরুরি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সূত্রমতে জানা যায়, ২০১৯ সালে সুঘাট ইউনিয়নের জয়লা জুয়ান গ্রামে স্বাস্থ্য বিভাগের ৯১ শতাংশ জমির উপর প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে তিনতলা মূল ভবনটি নির্মিত হয়। এখানে ১০টি শয্যাসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি থাকলেও পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম এখনও চালু হয়নি। যার ফলে আশপাশের প্রায় ৩১টি গ্রামের নারী, শিশু, কিশোর ও কিশোরীরা জরুরি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এমনকি কেন্দ্রটিতে ২ জন মেডিকেল অফিসার ও ৪ জন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে আছেন ১ জন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ও ১ জন নার্স। এ ছাড়াও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্ট, পরিচ্ছন্ন কর্মী, আয়া এবং আউট সোর্সিং থেকে ৪ জনসহ মোট ৯ জন কর্মরত আছেন।
জয়লা গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও গুয়াগাছি গ্রামের আব্দুল জলিল জানান, এই জায়গায় আগে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ছিল। সেটি ভেঙ্গে নতুন করে হাসপাতাল করায় আমরা অনেক খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু ৫ বছর অতিবাহিত হলেও এটি এখনো পরিপূর্ণভাবে চালু হয়নি। স্বল্প পরিসরে কয়েকজন স্টাফ দিয়ে সীমিত আকারে সেবা দিলেও অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি চালু না হওয়াতে আমাদের ১৬ কিলোমিটার দূরে শেরপুর শহরেই যেতে হচ্ছে।
দায়িত্বরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফ.ডব্লিউ.ভি) মাহবুবা খানম জানান, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি এখনও চালু হয়নি। আমরা নিয়মিত এখান থেকে আগতদের স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ ও ঔষধপত্র বিতরণ করছি। এটি চালু হলে গর্ভবতী নারী, প্রসবকালীন সেবা, প্রসূতি নারী ও নবজাতকসহ ১৫ বছরের কম বয়সী কন্যা শিশুরা বিনামূল্যে সেবা পাবে।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. সুমাইয়া আক্তার জানান, সুঘাট ইউনিয়ন ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটিতে গ্রামের মানুষ স্বাভাবিক প্রসব থেকে শুরু করে সিজারিয়ান অপারেশনসহ মা ও শিশুর নানাবিধ
প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা। কিন্তু জনবল সংকটে তা সম্ভব হচ্ছেনা।
তিনি আরও জানান, পুরোপুরি জনবল নিয়োগ দেয়া হলে এলাকার মানুষ ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা পাবেন।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আব্দুল আলিম জানান, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি আছে। কিন্তু জনবল নিয়োগ না হওয়ায় কেন্দ্রটি চালু হচ্ছে না। ভবনটি যেন নষ্ট না হয়, এজন্য যে কয়জন আছেন তাদের দিয়ে প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।
মানবকণ্ঠ/এসআর
Comments