সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের তথ্যদাতা ও অনুগত সরকারি এক কর্মকর্তার জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) আসাদের অনুগত ওই কর্মকর্তাকে মাথায় গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় বলে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, সিরিয়ার ইসলামপন্থী গোষ্ঠী নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যোদ্ধারা দেশটির স্থানীয় একজন কর্মকর্তার প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। দেশটির ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের অনুগত ও তথ্য পাচারকারী হিসেবে অভিযোগ তুলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
তবে এই বিষয়ে মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও দামেস্কের কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, সিরিয়ার নতুন শাসকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যোদ্ধারা শুক্রবার সকালে সাবেক প্রশাসনের সবচেয়ে পরিচিত অনুগতদের একজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা আসাদ অনুগত ওই কর্মকর্তার নাম মাজেন কেনেহ।
ব্রিটেন-ভিত্তিক এই পর্যবেক্ষক সংস্থা বলেছে, রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠের দুম্মারের রাস্তায় যোদ্ধারা কেনেহর মাথায় গুলি চালিয়ে হত্যা করেছেন।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপ্রসূত নিরাপত্তা প্রতিবেদন লেখার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। যে প্রতিবেদনের জেরে দেশটির অনেক যুবককে নির্যাতন ও কারাভোগ করতে হয়; যারা আসাদের শাসনামলে কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
বিদ্রোহীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে গত ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদ সিরিয়া ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যান। এরপর দেশটির ক্ষমতায় আসে সুন্নি ইসলামপন্থী বিদ্রোহীগোষ্ঠী হায়াত তাহরির-আল-শাম (এইচটিএস)। এরপর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আসাদ অনুগতদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু করে ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি গাছের গুঁড়িতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে মাজেন কেনেহকে। তার জামাকাপড় রক্তাক্ত এবং মাথায় গুলির ক্ষত রয়েছে।
এ সময় ঘটনাস্থলে শিশুসহ শত শত মানুষকে দেখা যায়; যারা মরদেহের চারপাশে জড়ো হয়েছেন। ভিডিওতে অনেক মানুষকে মোবাইল ফোনে মাজেনের মরদেহের ছবি তুলতে ও ক্ষুব্ধ জনতাকে লাঠি দিয়ে মরদেহে আঘাত, এমনকি মাথায় লাথি মারতেও দেখা যায়।
সূত্র: এএফপি
মানবকণ্ঠ/আরএইচটি
Comments