দীর্ঘ ১৫ মাস গাজায় নারকীয় বর্বরতা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আইডিএফ। অনবরত বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত নগরীতে পরিণত হয় গাজা উপত্যকা। ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে উপত্যকার প্রায় ৯২ শতাংশ আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
দীর্ঘ আগ্রাসনের পর গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সময়ে ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া, আহত হয়েছে এক লাখ ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বর্বরোচিত হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাস নির্মূলের নামে এই হামলায় হতাহতের শিকার হয় উপত্যকার নিরীহ ফিলিস্তিনিরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ১৫ মাসে গাজার ৪৬ হাজার ৭০৭ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। নিহতদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু।
একই সময়ে ইসরায়েলি তাণ্ডবে আহত হয়েছে উপত্যকার ১ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ বাসিন্দা। অনেকে চিরতরে হারিয়েছে হাত, পা-সহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ। আর ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েছে প্রায় ১১ হাজার ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি বোমা হামলার অধিকাংশই আঘাত হেনেছে গাজার আবাসিক ভবনগুলোতে। ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হওয়া বাড়িঘর ৪ লাখ ৩৬ হাজার, যা উপত্যকার মোট বাড়ি-ঘরের প্রায় ৯২ শতাংশ।
ধর্মীয় স্থাপনার পাশাপাশি ইসরায়েলি বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্যবস্তু ছিল গাজার স্বাস্থ্যখাত। সাড়ে ৬শ স্বাস্থ্য অবকাঠামো হামলা চালিয়েছে তারা। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী।
গাজার শিক্ষাখাতকেও ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল। ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হওয়া স্কুল ৫৩৪টি, যা মোট স্কুলের প্রায় ৯৫ শতাংশ। এতে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে ছিটকে পড়েছে ৬ লাখের বেশি শিশু।
ইসরায়েলি হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছুটে বেড়িয়েছে অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দারা। বাস্তুচ্যত হয়েছে প্রায় ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি।যা উপত্যকাটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ। এদের মধ্যে অনেকেই বাস্তুচ্যুত হয়েছে একাধিকবার।
Comments