আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার বিএনপির আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এই জাতির সঙ্গে বারবার বেইমানি করেছে। আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগে প্রমাণ করতে হবে, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে কি না।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাদের নিয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
মঈন খান বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর জনগণের গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। সে দায়িত্ব হলো দেশের মানুষের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া। এটি হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ১৮ কোটি মানুষের প্রদত্ত ম্যান্ডেট। আমরা সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি যাতে তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, বিগত ১৫ বছর ধরে একটি স্বৈরাচারী সরকার দেশের মানুষের কণ্ঠরোধ করেছে, তাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, অর্থনৈতিক অধিকারও বাতিল করেছে। লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। গুম, খুন, অত্যাচার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে। এ সব মামলায় বেগম খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের প্রায় ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘লন্ডনে বিএনপির নেতারা আন্দোলন করার সময় সেখানে কিছু করতে না পেরে দেশে তাদের আত্মীয়স্বজনদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে। যারা বিদেশে ছিলেন তাদের দেশে ফিরতে দেওয়া হয়নি। এক ধরনের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পরে দেশের ছাত্র-জনতা উঠে দাঁড়ায় এবং ফলস্বরূপ জুলাই-আগস্টে তাদের বুকে গুলি মেরে হাজার হাজার ছাত্রকে হত্যা করে এই সরকার।’
মঈন খান বলেন, ‘পৃথিবী প্রমাণ করেছে, জনতার আন্দোলনে কোনো স্বৈরাচারী শাসন টিকে থাকতে পারে না। এটা আবারও দেশের প্রেক্ষাপটে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, দেশে পুনরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। সেই গণতন্ত্রের জন্যই তো ১৯৭১ সালে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, যে দল একদলীয় বাকশাল থেকে দেশকে মুক্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, সেই দল কেন একটি ফ্যাসিস্ট সরকারকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করবে? বাস্তবতা হচ্ছে, বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছে। তারা নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি দাবি করে, কিন্তু তারা কখনো স্বাধীনতার পক্ষে ছিল না। ’৭১ সালে যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন তারা দেশের জনগণকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অস্ত্রের মুখে ফেলে দিয়ে কাপুরুষের মতো সীমান্ত পার হয়ে চলে গিয়েছিল। পরবর্তীতে তারা সংসদে দেশের গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল।’
মানবকণ্ঠ/আরএইচটি
Comments