Image description

পেশায় গাড়িচালক হলেও বেশভূষা তার জমিদারি। পরোয়া করেন না কাউকে। সিরাজ দৌলা নামক সিভিল এভিয়েশন বাংলাদেশ (ক্যাবের) ওই গাড়ি চালকের প্রভাবে অনেক কর্মকর্তাও অসহায়। তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কেউ কিছু করলেই তার বিরুদ্ধে চলে নানা ষড়যন্ত্র। সম্প্রতি সিরাজ মেতেছেন সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজ, কুর্মিটোলা অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে।

এর প্রতিবাদে বুধবার সকালে মানবন্ধন করেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা, কর্মচারি, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। 

মানববন্ধনে তারা বলেন, কয়েকদিন আগে ওই স্কুলে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিজের সন্তানকে ভর্তি করানো সহ নানাবিধ অবৈধ সুবিধা প্রাপ্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করেন সিরাজ। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী  এ বছর শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন অপরিহার্য। গাড়িচালক সিরাজ  নিয়ম অনুযায়ী ছেলের জন্য অনলাইন আবেদনে অংশ না নিয়েই প্রভাব খাটিয়ে ভর্তি করতে চান। স্কুল কর্তৃপক্ষ সরকারি বিধি মোতাবেক ভর্তি হতে বললে  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অস্থিতিশীল করার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠেন সিরাজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুণ্ণ করাসহ পাঠদানের বিদ্যমান পরিবেশ বিঘ্নিত করার জন্য মানববন্ধন করারও হুমকি দেন। যদিও শেষ পর্যন্ত অন্য অভিভাবকদের সাড়া না পেয়ে তা প্রত্যাহার করেন সিরাজ। 

সিরাজের এমন কর্মকাণ্ডে বিব্রত সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।

একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খানের নাম ভাঙ্গিয়ে চলতেন সিরাজ দৌলা। দাবি করতেন তার দাদাশ্বশুর সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আহাম্মদ আলী ফারুক খানের আস্থাভাজন। আওয়ামী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সিরাজ বিমানবন্দরে সোনাচোরাকারবারি চক্র তৈরি করেন। ২০২৪ সালের ৩০ মে ডিজিএফআইয়ের বিমানবন্দর ডেস্কে তিনি সোনা চোরাচালানের অপরাধে আটকও হন।

এ সময়ে তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তাকে বদলি করাসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে সিরাজ রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা তো দূরে থাক, বদলি ও করতে পারেনি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। 

নানা অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়া সিরাজ বর্তমানে মেতেছে সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজ অস্থিতিশীল করার খেলায়। যে প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় সর্বপ্রথম শতভাগ পাশের কৃতিত্ব অর্জন করে বর্তমান অধ্যক্ষের অক্লান্ত প্রচেষ্ঠায়। ২০২৪ সালের এস এসসি পরীক্ষায় ও শতভাগ পাশের উক্ত কৃতিত্ব অব্যাহত রয়েছে। 

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা বলেন, বর্তমান প্রিন্সিপাল এই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান নানা অসঙ্গতি দূর করে পড়ালেখার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে কলেজ শাখার অনুমোদন গ্রহণ করে কলেজ শাখার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে স্কুল শাখায় ইংরেজি ভার্সন চালু করা সহ কলেজ শাখায় ইংরেজি ভার্সন চালু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি শতভাগ পাশের গৌরবসহ সহশিক্ষা কার্যক্রমে বিভিন্ন সফলতা অর্জন করছে।

তবে সম্প্রতি ড্রাইভার সিরাজসহ কতিপয় দুস্কৃতিকারী প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমরা প্রত্যাশা করি এই প্রতিষ্ঠানের সুন্দর ও স্বাভাবিক পরিবেশ যাতে কেউ বিঘ্নিত করতে না পারে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

মানবকণ্ঠ/এসআরএস