Image description

নানা দুর্নীতি অনিয়মে জর্জরিত ব্যক্তিদের নিয়ে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব গভর্নর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যপরিধি ও সুনাম ধরে রাখতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সনের ৩৮ আইন মোতাবেক দুই বছরের জন্য বোর্ড অব গভর্নর নির্বাচন করা হয়। সেখান থেকে নির্বাচিতরা পরবর্তী দুই বছর বোর্ড পরিচালনা করে থাকেন।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সনের ৩৮ আইনের (চ) ধারামতে, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী মহল হতে একজন খ্যাতনামা ব্যক্তি এবং দুজন খ্যাতনামা পেশাজীবী যুক্ত করার কথা উল্লেখ থাকলেও বর্তমান চ্যান্সেলর নানা মহলে জালিয়াত, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত বিতর্কিত ব্যক্তিদের মনোনীত করেছেন। যা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সনের ৩৮ আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, দেশে শত শত স্বনামধন্য কোম্পানিগুলোর খ্যাতিমান ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী থাকতেও অনিয়ম-জালিয়াতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী কাইয়ূমকে নির্বাচিত করার পাঁয়তারা করছেন। এতে নিশ্চয়ই বিশেষ কোনো কারণ অথবা এদের দ্বারা চ্যান্সেলর কোনো না কোনো মাধ্যমে লাভবান হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট।

কে এই এম এ কাইয়ূম: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর বাড্ডা পুনর্বাসন প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তদের ৭১টি প্লটের চুরি যাওয়া নথি রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সিল, সিটি করপোরেশনের ভুয়া প্রত্যয়নপত্র, পর্নো সিডি গত ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজউকের অ্যানেক্স ভবনের ৫১৪ নম্বর কক্ষ থেকে রাজউক চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে কালোর্স ট্রেড লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্ধার করা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানটির মালিকই হচ্ছেন এম এ কাইয়ূম। তিনি মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক ও অখণ্ড ঢাকা সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার ছিলেন। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন মনিরুল ইসলাম ওরফে গোল্ডেন মনির। দেশে অবৈধ সোনা আমদানির সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাড়িছাড়া করার কুশীলবদের সাথে আঁতাত করা, আন্ডারওয়ার্ল্ড পরিচালনা, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির একাধিক সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকার পরেও কীভাবে কাইয়ূমকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বোর্ডে রাখা হলো সে বিষয়ে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ শফিকুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। এই প্যানেলে সম্পূর্ণ চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীরাই নির্বাচিত হন। যদিও প্রতি ক্যাটাগরিতে তিনজন করে মনোনীত করে দেয়ার কথা আইনে উল্লেখ আছে। তবুও কেন তিনি একজনকে মনোনীত করেছেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। বিষয়টি চ্যান্সেলরের কাছে জানতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল দেয়া হয়, তবে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। অতঃপর তার পিএস নাসির উদ্দীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চ্যান্সেলর স্যার ঢাকায় মিটিংয়ে আছেন। কিন্তু অভিযোগকারী জানান, চ্যান্সেলরকে মোটা অঙ্কের টাকার মাধ্যমে ম্যানেজ করে নিজের নাম প্রস্তাবনা করিয়েছেন এম এ কাইয়ূম।

মানবকণ্ঠ/এসআরএস