ইতালি নেওয়া কথা বলে ফরিদপুর থেকে দুই জনকে নেওয়া হয়েছিল লিবিয়ায়। সেখানে নেওয়ার পর তাঁদের ওপর নির্যাতন করা হয়। এরপর নেওয়া হয় মুক্তিপণ। তবে এতেও মুক্তি মেলেনি। গুলি করে হত্যা করা হয়েছে ওই দুই যুবককে।
নিহত ওই দুই যুবক হলেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৬) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে আকাশ হাওলাদার ওরফে রাসেল (২৫)। তাঁদের হত্যার পর পরিবারের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়েছে সেই ছবি।
এদিকে এ খবর শুনে থামছে না দুই পরিবারের আহাজারি। সন্তানের জন্য বিলাপ করছেন আকাশ হাওলাদারের বৃদ্ধ মা লিপিয়া বেগম। সন্তান নিহত হওয়ার খবরে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি।
নিহতদের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘারুয়া ইউনিয়নের আনোয়ার মাতুব্বর, আবু তারা মাতুব্বর ও আলমাস মাতুব্বরের প্রলোভনে পড়ে ইতালি যাওয়ার প্রস্তুতি নেন এই দুই যুবক। গত নভেম্বরে এই চক্রের হাতে ১৬ লাখ করে টাকা দেওয়া হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, তাঁর ছেলেকে প্রথমে দুবাই নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে সৌদি আরব, তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘৪-৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। ওরা আজ আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারকারী চক্র। সেই টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা ফয়সাল হোসেন বলেন, এই মানব পাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। ইতালি নেওয়ার কথা বলে যাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়, তাঁদের সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটে টাকা না পেলে। কখনো অত্যাচার, কখনো মেরে ফেলে ওরা।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, ‘ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments