উপরে ভুক্তভোগী বাবু, নিচে বামপাশে অভিযুক্ত শাহ আলম ও ডানপাশে অভিযুক্ত মুনসের।
রাজধানী ঢাকার অদূরে ধামরাইয়ে আসাদুল নামে এক ব্যক্তির সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে তাঁর বাড়িতে আগত অতিথি বাবু (২৮) নামের এক যুবকের উপর অতর্কিতভাবে ধারালো অস্ত্রের দ্বারা প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত বাবু কুল্লা ইউনিয়নের বড় কুশিয়ারা মৌজার মাখুলিয়া গ্রামের আব্দুর রব এর ছেলে।
গত রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) কাইজারকুন্ড এলাকায় নিজের বোন ও দুলাভাইয়ের বাসার সামনে ঐ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা খোকন মোল্লা (৪৫) নামে এক ব্যক্তির সাথে কথা বলছিলেন বাবু। সেসময় ভুক্তভোগী বাবুর উপর ঐ গ্রামের শাহ আলম (৪০), মুনসের (৪১), সাচ্ছু (৪৫), আলামিন (৩৫), মনির (৩৫) আঃ সাত্তার (৩৫) এবং আঃ কাদের (৪০) ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এব্যাপারে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী খোকন মোল্লা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সেই অভিযোগের এজাহার থেকে জানা যায়, গত রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় খোকন মোল্লা এবং বাবু রাস্তায় দাড়িয়ে কথা বলতেছিলেন৷ সেসময় শাহ আলম, মুনসের ও সাচ্ছু দলবলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের দুই জনের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এসময় নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য খোকন মোল্লা ঐ স্থান থেকে পালিয়ে যান এবং বাবু নিজের বোনের বাড়িতে প্রবেশ করেন। তবে বোনের বাড়িতে প্রবেশের পরও শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাননি বাবু৷ হামলাকারীদের মধ্যে শাহ আলম, মুনসের ও সাচ্ছু বাবুর বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করেন এবং দা দিয়ে বাবুর মাথায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই বাবু মারাত্মক আহত হয় ও তার মাথায় রক্তক্ষরণ ঘটে। এসময় হামলাকারীরা বাবুর বোনের বাড়ি থেকে নগদ ১,৫০,০০০ টাকা এবং ২ ভরি স্বর্ণের গহনা লুট করে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী বাবু বলেন, আমার সাথে হামলাকারীদের কোন পূর্বশত্রুতা নেই। আমি আমার বোনের বাড়িতে এসেছি। আমার বোন জামাইয়ের সাথে তাদের পূর্বশত্রুতা রয়েছে বলে আমি শুনেছি। তবে এক্ষেত্রে তারা কেনো আমার উপর প্রাণঘাতী হামলা করলো তা নিয়ে আমি সন্দিহান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শাহ আলম বলেন, ঘটনার সময় আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম না৷ এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের উপর আক্রমণ করেছে। আমি নিজেই খোকন মোল্লা এবং তাঁর ভাই মাসুম মোল্লা কর্তৃক হয়রানির শিকার হচ্ছি।
উল্লেখ্য শাহ আলম, মুনসের ও সাচ্ছুর ব্যাপারে এলাকাবাসীর অভিযোগের শেষ নেই। বড় কুশিয়ারা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শাহ আলম, মুনসের ও সাচ্ছু বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর মাদক সম্রাট আরিফের হয়ে কাজ করতো। তারা সেসময় এলাকায় মাদক বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, দখলদারিত্ব, রাহাজানিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিল।
তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হলে তাদের নেতা মাদক ব্যবসায়ী আরিফ গাঁ ঢাকা দেয়। সেসময় এলাকার জনগণ আওয়ামী লীগের দোসর ও মাদক ব্যবসায়ী আরিফের বাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনার পর আরিফ আত্মগোপনে চলে গেলেও সে শাহ আলম, মুনসের ও সাচ্ছুর দ্বারা পুনরায় সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আর এরই অংশ হিসেবে এই তিনজন হামলাকারী বিভিন্ন সময় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
Comments