
গাজীপুরের শ্রীপুরে মাথায় লাল কাপড় বেঁধে হাতে রামদা নিয়ে উপজেলা যুবদল নেতার মহড়া ও মাইকে ঘোষণা দিয়ে চাঁদা চাওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় রাতভর অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মন্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এমসি বাজারের ব্যবসায়ী হযরত আলী মামলাটি দায়ের করেন।
ওসি জানান, গতকালের ঘটনায় রাতে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন এজাহারনামীয়সহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এক আসামির কাছ থেকে একটি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে। মূলহোতা জাহাঙ্গীর আলমসহ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার মুলাইদ মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত দুলাল উদ্দিনের ছেলে হাসেম (৩৯), আইনুুদ্দিনের ছেলে আসাদুল ইসলাম (২৪) ও মৃত ছমির উদ্দিনের ছেলে সুমন মিয়া (২৮) এবং টেপিরবাড়ি গ্রামের দেওচালা এলাকার মো. মাইজ উদ্দিনের ছেলে হৃদয় হাসান রাকিব (২৬)।
উল্লেখ্য, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু দলবল নিয়ে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের এমসি বাজার এলাকার স্বপ্নপুরী হোটেলের সামনে হ্যান্ডমাইক দিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির ঘোষণা দেন। প্রকাশ্যে চাঁদা চাওয়ার এমন ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরপরই যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ওই নেতাকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করে। অভিযুক্ত যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের নূরু বেপারীর ছেলে। তিনি শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘জাহাঙ্গীর ভাইয়ের অ্যাকশান ডাইরেক্ট অ্যাকশান, বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম প্রিয় দোকানদার ভাইয়ের আমি জেল থেকে এসে ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, এমসি বাজারটাকে আমি আমার নিজস্ব লোক ও আপনাদের সহযোগিতার সুন্দরভাবে পরিচালনা করব। কিন্তু কিছু মানুষের জন্য আমি পারি নাই। আজকে আমি লোকজন নিয়ে বাজারে এসেছি। আপনাদের সঙ্গে সম্পর্ক করতে এবং আপনাদেরকে সহযোগিতা করতে। আজকের পর থেকে আমি জাহাঙ্গীর যতদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকি ততদিনে পর্যন্ত আমার নিয়ন্ত্রণে চলবে এমসি বাজার এবং আপনাদেরকে দয়া করে বলছি, এখন এই মুহূর্তে আমার লোকজন খাজনা উঠানো শুরু করবে। কেউ বাধা দেবেন না। বাধা দিলে ভয়াবহ পরিণতি হবে। অনেক খেসারত দিতে হবে। কে বাজার ইজারা নিল তা আমার জানার বিষয় না। তাই কেউ বাধা দেবেন না। আমাদের কাজ আমাদের করতে দেন। এখনই আমার লোকজন টাকা উঠানো শুরু করবে।’
এসময় তার আশপাশে লাল গামছা দিয়ে মাথা-মুখ ঢাকা শতাধিক যুবককে দেখা গেছে। যাদের হাতে ছিল রামদা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র।
Comments