
আওয়ামী লীগের দুর্গখ্যাত গোপালগঞ্জে ১৯ বছর পর জনসভা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিত উন্নতি ও নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে দলটির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশ হবে। সোমবার সকাল ১০টায় গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কের মুক্তমঞ্চে এই সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএনপি।
সমাবেশকে ঘিরে সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উচ্ছ্বাস। শহরের পৌর পার্ক মাঠে এ জনসভার আয়োজন করেছে জেলা বিএনপি। সভাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে সড়কের দু পাশ।
জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা রয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপনের। প্রধান বক্তা হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) সেলিমুজ্জামন সেলিম, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) খন্দকার মাশুকুর রহমান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সমাবেশের সভাপতিত্ব করবেন জেলা বিএনপির আহবায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান।
২০০৪ সালে ফরিদপুর অঞ্চলের বিএনপির ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন করেছিলেন তারেক রহমান। এরপর গোপালগঞ্জে আর কোন জনসভা বা সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি। ঘরোয়া আলোচনার মাধ্যমেই সীমাবদ্ধ ছিলে তাদের কর্মসূচি। তবে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে গোপালগঞ্জে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে।
এদিকে, সমাবেশকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সভাস্থল পৌরপার্কে সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। গোপালগঞ্জ শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙানো এবং সড়কে সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। সমাবেশ ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উচ্ছ্বাস। সমাবেশ সফল ও রেকর্ড সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা, প্রচার ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছে।
জেলা বিএনপির আহবায়ক শরীফ রফিকউজ্জামান বলেন, ‘গোপালগঞ্জ শহরের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০০৪ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সর্বশেষ ফরিদপুর বিভাগীয় ইউনিয়ন সভা করেছিলেন। যা জনসভায় পরিবর্তন হয়েছিল। ১৯ বছর পর নেতা-কর্মীরা ৩০-৪০ হাজার লোক সমাগমের টার্গেট নিয়ে জেলার সর্বত্র তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ৩১ দফা বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্তা বাড়াতে উৎসবের আমেজে নবীন-প্রবীণ সবাই কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘদিন আমরা উন্মুক্ত কাজ করতে পারিনি। তাই ২৪ তারিখের সমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।”
রফিকউজ্জামান বলেন, ‘গত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গোপালগঞ্জে স্বাধীনভাবে একটি কর্মসূচিও পালন করতে দেয়নি। বিগত সময় জাতীয়তাবাদী ধারার সমর্থকেরা ভয়ে আত্মপ্রকাশ করতে পারেনি বা কোন কর্মসূচি করতে পারেনি। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর এখন আর কোনো ভয় নেই।’
সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর দেশে কোনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছিল না। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ও তৎকালীন প্রশাসনের বিমাতা সুলভ আচরণের কারণে বিএনপি প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনায় গোপালঞ্জে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।”
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments