Image description

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে গ্রেপ্তার এক আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে বিএনপি নেতারা তদবির করেছেন বলে জানা গেছে।

উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিল্পপতি লাক মিয়াকে হামলা, ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে আড়াইহাজার থেকে ঢাকার গুলশানের বাসায় যাওয়ার সময় রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন সেতু এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। লাক মিয়াকে আড়াইহাজার থানায় আনার পর থেকে স্থানীয় বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতাকর্মীদের একাংশ তাঁকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য তদবির করেছেন বলে পুলিশের একটি সূত্র থেকে খবর পাওয়া যায়।

গ্রেপ্তার লাক মিয়া ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দী এলাকার মৃত ছাবেদ আলীর ছেলে ও ভাই ভাই স্পিনিং মিলের স্বত্ত্বাধিকারী। 

আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান লাক মিয়ার বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানায় হামলা, ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে দু’টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাঁকে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে লাক মিয়া পর পর তিন বার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলায় একজন প্রভাবশালী শিল্পপতি ও আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত বছর ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে গেলেও ইউপি চেয়ারম্যান লাক মিয়া এলাকায় অবস্থান করেছিলেন। নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদে তাঁর স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে এলাকা থেকে তার গুলশানের বাসায় যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন। পথে কাঞ্চন সেতু এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। 

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, লাক মিয়াকে রূপগঞ্জ থেকে আড়াইহাজার থানায় নিয়ে যাওয়ার পর থেকে মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত ও বুধবারও তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে মধ্যম সারির অনেক নেতা থানায় তদবির করেন। তারা লাক মিয়ার পছন্দের খাবারও সরবারাহ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ জানান, আওয়ামী লীগ নেতা বিনাভোটের ইউপি চেয়ারম্যান লাক মিয়ার পক্ষে দলীয় কিছু লোকের তদবির করার বিষয়টি লোকমুখে শুনেছেন। এ বিষয়টি পরবর্তী দলীয় সভায় আলোচনা করা হবে। তদবিরে কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, লাক মিয়া আড়াইহাজার থানার দু’টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। কেউ তদবির করলেও আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে।