Image description

দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি সময়ে সংঘটিত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে মধ্যরাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। তারা ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবিও জানান। রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নারী শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি মেয়েদের সবগুলো হল ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নেয়।

এদিকে একই দাবিতে রাত দশটার দিকে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মশাল মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি শহীদ মিনারে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে  সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা৷

এসময় ধর্ষণসহ নারী নিপীড়ন ঠেকাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর অপসারণ ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সব ধর্ষণের বিচার দাবি জানান তারা। এরপর সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে রাত ১১টা থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ৩০ মিনিট অবস্থানের পর রাত সাড়ে এগারোটার দিকে অবরোধ তুলে নেন তারা।

বিক্ষোভ সমাবেশে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মালিহা নামলাহ বলেন, আমরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে গত চার বছর আগেও আন্দোলন করেছি, এখন আবার করছি। কয়েকবছর পর আবার করবো। মানে ধর্ষণের একটা খবর ভাইরাল হলে তখনই আন্দোলন শুরু হয়। এরমধ্যে গত কয়েকবছরে যেসব ধর্ষণ হয়েছে সেগুলোর বিচার চাপা পড়ে গেছে। এসবের থেকে চিরস্থায়ী সমাধানের জন্য আমাদের একটি সিস্টেম চালু করতে হবে। যেই সিস্টেমের মাধ্যমে চিরস্থায়ীভাবে এই ধর্ষণ বন্ধ হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহের আফরোজ শাঁওলি বলেন, নারীর সামান্য মৌলিক অধিকার ও শরীরের নিরাপত্তা দিতে এই রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছে। আমরা দেখেছি আমলের পর আমল পরিবর্তন হয় কিন্তু নারীর নিরাপত্তার কোনো পরিবর্তন হয় না। নারী সর্বদা একটা ডি-হিউম্যানাইস পশুর মত জীবনযাপন করে। দেশে একের পর এক ধর্ষণ ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্লজ্জের মত বলছেন— দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোন অবনতি ঘটেনি।

তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন এই দেশের একটি নামমাত্র আইন আছে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড তবে একবারের জন্যেও এই রাষ্ট্র সেই নজির স্থাপন করতে পারেনি। কেউ দেখাতে পারবেনা একজন ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ থেকে পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই দর্শকের ফাঁসি দিয়ে এই নজির বাংলাদেশে তৈরি করতে হবে।

মানবকণ্ঠ/আরআই