
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মুহাম্মদ আলী। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে আলট্রাসনোগ্রাম করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শম্পা আক্তারকে আলট্রাসনোগ্রাম করার পরিবর্তে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে যান চিকিৎসক। সিজারিয়ানের মাধ্যমে নবজাতককে বের করে আনা হলেও শেষ পর্যন্ত কন্যাশিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। তাকে হত্যার অভিযোগ ওঠে।
শুধু তাই নয়, সিজার করার সময় কেটে ফেলা হয় শম্পার জরায়ু। আবার পেটে সুতা, পিন ও ব্যান্ডেজের কাপড় রেখেই সেলাই করা হয়। গাজীপুরের কালিয়াকৈর বাইপাস সংলগ্ন কলেজ রোডে দেওয়ান ডিজিটাল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল মালিকের নামে সমন জারি করেছেন আদালত।
আসামিদের আগামী ১৬ এপ্রিল আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত সোমবার এ আদেশ দেন। এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গাজীপুর সিআইডি পুলিশের এসআই জুলহাস আলী মৃধা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালবাথান গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ আলী তাঁর স্ত্রী শম্পা আক্তারকে ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট নিয়মিত চেকআপের অংশ হিসেবে দেওয়ান ডিজিটাল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতালের কনসালট্যান্ট (গাইনি অ্যান্ড অবস) ডা. কুহু মুৎসুদ্দী রোগীকে আলট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দিয়ে হাসপাতালের এমডি আমিনুর দেওয়ানের সঙ্গে দেখা করতে বলেন।
পরে তারা অর্থের লোভে শম্পাকে আলট্রাসনোগ্রাম করার কথা বলে ভুল বুঝিয়ে সিজার করে ফেলেন। পরদিন নবজাতকের মৃত্যু হয় এবং শম্পার অবস্থাও খারাপ হতে থাকে। পরে অন্য হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তাঁর পেটে কিছু সুতা, পিন ও ব্যান্ডেজ থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে তিনি সুস্থ হন। এ ঘটনায় মুহাম্মদ আলী গাজীপুরের সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে আদালতে মামলা করেন।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments