দেশীয় অস্ত্রসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেফতার

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো: চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার মনপুরা গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মো: আব্দুল হান্নান (৩৫), লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর থানার চরমোহনা গ্রামের বাহাদুর বাড়ির মৃত সিরাজ মোল্লার ছেলে মো: শরীফ হোসেন (৪৫), কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার নুরপুর (দোলাই নবাবপুর) গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে মো: আলাউদ্দিন (৩৫) ও একই থানার জোড়পুকুরিয়া গ্রামের জামিয়াপাড়া ভূঁইয়া বাড়ির মৃত হাজী রমিজ উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৬০)।
ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ও ০১ মার্চ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম অংশের ফালগুনকরা এলাকায় চট্টগ্রামমুখী লেনে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র পিকআপ ভ্যানে করে এসে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পরিকল্পিতভাবে একই কায়দায় দুইজন প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতি করে। এ সময় ডাকাতরা প্রবাসীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, দামি মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার সহ প্রবাসীদের বিভিন্ন দামি মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। দু’টি ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানায় পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চৌদ্দগ্রাম-নাঙ্গলকোট সার্কেল) নিশাত তাবাসসুম এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে মহাসড়কে স্থাপিত সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ডাকাতির ঘটনাগুলোতে একই পিকআপ ভ্যান ব্যবহার ও ডাকাতরা একই দলের সদস্য বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
তিনি আরও জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের চৌকস একটি টিম কুমিল্লার চান্দিনা থানা এলাকা ও পাশ^বর্তী চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের চার সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় ডাকাতদের কাছ থেকে ডাকাতি সংঘটনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ গাড়ি, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লুণ্ঠিত মালামাল, নগদ টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে।
ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ আরও জানান, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত ডাকাতরা কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে সংঘবদ্ধ হয়ে ৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কায়দায় মহাসড়কে ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। এক্ষেত্রে তারা বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রবাসীদের গাড়িকে টার্গেট করে মহাসড়কের নির্জন স্থানে পিকআপ গাড়ি দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে ধারালো দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি কাজ সম্পাদন করে বলেও জানায়।
ওসি আরও বলেন, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের অপর সদস্যদের আটকের ব্যাপারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। বুধবার দুপুরে আটককৃতদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
Comments