Image description

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ২৮৬ দিন কাটানোর পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন সুনীতা উইলিয়ামস, বাচ উইলমোরসহ ৪ নভোচারী। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫ টা ৫৭ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের উপকূলে অবতরণ করেছে তাদের বহনকারী ক্যাপসুলটি।

সুনীতা, বাচের সঙ্গে আরও যে ২ জন নভোচারী এসেছেন, তারা হলেন নাসার নিক হগ এবং রুশ নভোচারী আলেকজান্ডার গর্বুনভ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইলন মাস্কের মালিকানাধীন কোম্পানি স্পেসএক্সের ‘ক্রু ড্রাগন’ ক্যাপসুলে ফিরে এসেছেন তারা।

চারটি বিশেষ প্যারাসুটের সাহায্যে ফ্লোরিডার উপকূলে নামে ক্রু ড্রাগন। ইলন মাস্ক তার এক্স অ্যাকাউন্টে ক্যাপসুলটির অবতরণের দৃশ্য শেয়ার করেছেন।

গত বছর জুনে বিমান প্রস্তুতকারী মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের তৈরি নভোযান স্টারলাইনারে চেপে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন সুনীতা ও বাচ। সেখানে গিয়ে আটকা পড়েন তারা। কারণ যে মহাকাশযানে তারা গিয়েছিলেন, সেটি বিগড়ে গিয়েছিল।

এমন অবস্থায় আটকে পড়া দুই নভোচারীকে ফিরিয়ে আনতে গত বছর থেকেই নানা পরিকল্পনা করতে শুরু করে নাসা। গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি দুই নভোচারীকে ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দেন। তাদের ফিরিয়ে আনতে নাসার তৎপরতার অংশ হিসেবে ক্রু-১০ মিশনের ফ্লাইটে তাঁদের ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ফ্লোরিডার উপকূলে নেমে আসার পর কিছুক্ষণ সমুদ্রে ভাসছিল তাদের বহনকারী ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুল। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে, ক্যাপসুলটিকে ঘিরে সাঁতার কাটছে কিছু কৌতুহলি ডলফিন। প্রায় এক ঘণ্টা পর মার্কিন নৌবাহিনীর একটি উদ্ধারকারী জাহাজ এই নভোচারীদের ক্যাপসুল থেকে বের করে নিয়ে আসে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সঙ্গে যেন তারা খাপ খাইয়ে নিতে পারেন, মূলত সেজন্য এক ঘণ্টা সময় নিয়েছে নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ।

ফ্লোরিডার উপকূল থেকে এই নভোচারীদের সঙ্গে নিয়ে টেক্সাসের হিউস্টন শহরে জনসন স্পেস সেন্টারের উদ্দেশে রওনা দেন উদ্ধারকারীরা। সেখানে তাদের বরণ করার জন্য আগে থেকেই উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

তবে পৃথিবীতে ফিরে এলেও এখনই নিজের পরিবার-বন্ধু-স্বজনদের দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবেন না মহাকাশচারীরা। কয়েক সপ্তাহ তাদের থাকতে হবে ক্রু কোয়ার্টারে। সেখানে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলবে তাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন মহাকাশে শূণ্য মাধ্যাকর্ষণে থাকার কারণে শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় নানা হেরফের ঘটে।

মহাকাশচারীদের অবতরণের পর তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে নাসার উপ সহযোগী প্রশাসক জোয়েল মনটালবানো এবং কার্যক্রম সমন্বয় ব্যবস্থাপক বিল স্পিচ বলেন, “এই মহাকাশচারীরা আমাদের গর্ব। ৯ মাসে ৯০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে প্রায় ১৫০টি গবেষণা করেছেন তারা। তাদের ফিরে আসায় আমরা খুবই খুশি।”

সূত্র : সিএনএন, বিবিসি

মানবকণ্ঠ/আরআই