Image description

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দশ বছর পর এবার লন্ডনে প্রথমবারের মতো একসঙ্গে উৎসব অনুষ্ঠান ভাগাভাগি করবেন তারা। চিকিৎসার জন্য গত জানুয়ারিতে লন্ডনে আসেন বেগম খালেদা জিয়া। এখানে বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, পুত্রবধূ, ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও তিন নাতনির সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করবেন তিনি।

এরআগে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে প্রায় আট বছর পর সেবার পরিবারের সদস‌্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন তি‌নি। শেষবার লন্ডনে খালেদা যখন ঈদ উদযাপন করেছিলেন তখন তার বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানেরা সঙ্গে ছিলেন। ছিলেন প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো’র স্ত্রী-সন্তনরাও। কোকোর মৃত্যুর পর সেটি ছিল জিয়া পরিবারের জন্য এক আবেগঘন পুনর্মিলন।

গত জানুয়ারি মাসে লন্ডনে আসেন বিএনপির চেয়ারপারসন। ৮ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি লন্ডনের দ্য ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বাসায় ফেরার পর গত দুই মাসে খালেদা জিয়াকে আর হাসপাতালে নিতে হয়নি। কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন হলে দ্য ক্লিনিকের চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বাসায় গিয়ে তার স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করছেন।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, তিনি দ্য ক্লিনিকের অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসের অধীনে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিমের সদস্যরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছেন।

খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরতে পারেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে জাহিদ হোসেন বলেন, ঈদের পর তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিমের পরামর্শে তিনি এপ্রিলের যেকোনো দিন দেশে ফিরতে পারেন। তবে পুরো বিষয়টি মেডিকেল টিমের অনুমতির ওপর নির্ভর করছে। তারেক রহমানও শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।

২০১৮ সালে বিএনপির চেয়ারপারসনকে একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই মামলায় সাজা নিয়ে তিনি দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন; কিন্তু বিএনপির নেত্রীর লিভার প্রতিস্থাপন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে বলে বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা অনেক দিন ধরে বলে আসছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে ২০২০ সাল থেকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে কয়েক দফা আবেদন করা হয়; কিন্তু সেই সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দী হয়েছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আসেন।

মানবকণ্ঠ/আরআই