Image description

ঢালিউডের আলোচিত ও সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় রাজধানীর ভাটার থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন ওই ভুক্তভোগী। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায়ও। লেখক তসলিমা নাসরিনও আছেন এ তালিকায়। তিনি মনে করছেন পরীমণির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে তথাকথিত এই গৃহকর্মীকে। 

এ নিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ‘লজ্জা’ খ্যাত এই লেখক। পরীমণির পাশে থাকার কথা স্মরণ করে তসলিমা নাসরিন বলেন, “পরীমণির সুসময়ে আমি পাশে থাকি না। ওর দুঃসময়ে আমি ছুটে আসি। আবার ওর আঙিনায় দুঃসময় এসে দাঁড়িয়েছে। এক মহিলা গৃহপরিচারিকার চাকরি নিয়ে ওর বাড়িতে ঢুকেছিল। কিছুদিন পর সে  বেরিয়ে এসে পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছে, আর মিডিয়াও বেশ ফলাও করে মহিলার সাক্ষাৎকার ছাপাচ্ছে, যেন মহিলা যা বলছে সবই সত্যি। মিডিয়ার চরিত্র আমরা জানি। নারী, বিশেষ করে সে নারী যদি ব্যতিক্রমী, সাহসী, প্রতিভাময়ী হয়, তাহলে তার সর্বনাশ না করে ছাড়বে না মিডিয়া। গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো, রক্ষণশীলতা আঁকড়ে রাখা, ক্ষমতার চাটুকারিতা বাংলাদেশের মিডিয়ার বিশেষ দোষ।” 

গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তসলিমা নাসরিন। তার মতে, “মিডিয়া তো রক্ষণশীল পুরুষতান্ত্রিক লোকদেরই তৈরি। এ আর নারীবিদ্বেষী সমাজ থেকে আলাদা কী হবে! পরীমণিকে আক্রমণ করার জন্য, তার চরিত্রে কালি লেপনের জন্য মহিলাটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যবহৃত হয়ে যাওয়ার পর মহিলাকেও কিন্তু মিডিয়া ছুড়ে ফেলে দেবে আস্তাকুঁড়ে। কোনো সৎ মিডিয়া কিন্তু কোনো সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে এক তরফের বক্তব্য নিয়ে মেতে ওঠে না, দু’তরফের বক্তব্যই গ্রহণ করে। নিরপেক্ষ থাকা মিডিয়ার জন্য অবশ্য কর্তব্য হলেও সেটিকেই তারা সবচেয়ে বেশি অবজ্ঞা করে।” 

গৃহপরিচারিকার ‘বদ উদ্দেশ্য’ রয়েছে বলে তসলিমা নাসরিনের। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “গৃহপরিচারিকার চাকরি করতে আসা মহিলাটি যে মিথ্যে কথা বলছে, তা সহজেই অনুমেয়। তার বর্ণিত চড় খেয়ে মুর্চ্ছা যাওয়ার ঘটনাটি যথেষ্ট সন্দেহ সৃষ্টি করে। পরীমণির বিরুদ্ধে সে যে নোংরা ভাষায় কথা বলেছে, তাতে মনে হয় সে বদ একটি উদ্দেশ্য নিয়ে পরীমণিকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র করছে এবং এই ষড়যন্ত্রে তাকে অনেকেই সাহায্য করছে। পরীমণির ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তার জঘন্য মন্তব্য সব রকম সীমা অতিক্রম করেছে।”

পরীমণির ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে তসলিমা নাসরিন বলেন, “পরীমণি কার সঙ্গে কথা বলবে, খাবে, ঘুরবে, বেড়াবে, শোবে, তা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। সম্মানীয় শিল্পীর বিরুদ্ধে অসম্মানজনক বাক্যাবলী উচ্চারণ করার জন্য মহিলাকে উৎসাহ দেওয়া বা উসকে দেওয়া এবং সেসব অবাধে প্রচার করা মিডিয়ার উচিত হয়নি। আদালতের উচিত নয় নারীবিদ্বেষী ষড়যন্ত্রের মামলাকে গ্রহণ করা বা আদপেই মূল্য দেওয়া। এই সত্যটা সবারই জানা উচিত, গরিব হলেই মানুষ সৎ হয় না। গরিবরাও অসৎ, ধুরন্দর, বদমাশ, মিথ্যুক, নিষ্ঠুর, চোর, ডাকাত, ধর্ষক, খুনী হতে পারে।”