Image description

ফরিদপুরের সালথায় দল ভারী করা নিয়ে বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭ থেকে ১০ টা পর্যন্ত উপজেলা গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া বাজারে সালাথা-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়কে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে হামলা পাল্টা হামলা চালিয়ে স্থানীয় একটি বাজারের অন্তত ১২ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ চেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেশিরভাগ সময় গট্টি ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করেছেন সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর। তবে ৫ আগস্টের পর তিনি গা ঢাকা দেন এবং কয়েকমাস কারাভোগ করেন। পরে ওয়াদুদ মাতুব্বরের গ্রাম্য দলের লোকজন প্রতিপক্ষের সঙ্গে মিলে যান। ওই লোকজনকে দলে মেশানো নিয়ে স্থানীয় নুরু মাতুব্বরের সঙ্গে জাহিদ মাতুব্বরের বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের জেরে এলাকায় উত্তেজনা চলছিল।

উত্তেজনার মধ্যেই নুরু মাতুব্বর একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। নুরু মাতুব্বরের অনুপস্থিতে বর্তমানে গ্রাম্য দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার ভাই উপজেলা শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনছুর মাতুব্বর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মহিনউদ্দীন।

এই বিরোধের জেরে বুধবার সন্ধ্যায় বালিয়া বাজারে সালথা-ফরিদপুর সড়কের উপর দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়া। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের অন্তত ১২ দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়েছে। প্রায় ৬ ঘণ্টা ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে বক্তব্য দিয়েছেন উভয় পক্ষের নেতারা।

জাহিদ মাতুব্বর বলেন, ২০১৮ সালে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকুর গাড়িতে হামলা করে আওয়ামী লীগের লোকজন। এখন তারাই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করছে। কোনো কারণ ছাড়াই বুধবার বিকেলে বালিয়া গট্টি ও ভাবুকদিয়া গ্রামে প্রথমে আমার দুই কর্মীকে মারধর করা হয়। পরে আবার বালিয়া বাজার থেকে ব্যবসায়ী মামুন শেখকে কুপিয়ে জখম করে। এরপরেই সংঘর্ষ শুরু হয়। নুরু মাতুব্বর, তার ভাই মুনছুর মাতুব্বর ও মহিনউদ্দীন এরা আওয়ামী লীগের দোসর। এদের প্রত্যেকের দলীয় পদ আছে। এরা চাচ্ছে এলাকায় আওয়ামী লীগের আধিপত্য ধরে রাখতে।

তবে মুনছুর নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে বলেন, আমরা বিএনপি করি। জাহিদ মাতুব্বর আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি লাবু চৌধুরীর লোক। বিগত দিনে তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। বুধবার বিকেলে বড় বালিয়ার গ্রামের সবুর খানকে অযথা মারধর করে জাহিদের লোকজন। পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রাখতে বালিয়া বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।