Image description

গত বছরের ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ডা. শাহাদাত হোসেন। তবে অতীতের মেয়ররা যেটা ‘পূর্ণ মেয়াদেও’ পারেননি; তিনি সেটা করে দেখিয়েছেন মাত্র সাড়ে ৫ মাসেই। প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা পৌরকর আদায় করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মুনিরুজ্জামান চসিক মেয়রের কাছে ১০০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বন্দরের পক্ষে বন্দরের সদস্য (হার্বার এন্ড মেরিন) আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ, সচিব মো. ওমর ফারুক এবং চসিকের পক্ষে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) কাছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নির্ধারিত পৌরকর হচ্ছে ১৬০ কোটি ১৬ লাখ ৪১ হাজার টাকা। ২০১৭ সালে নির্ধারিত এ পৌরকরের বিপরীতে চবক পরিশোধ করে আসছিল মাত্র ৪৫ কোটি টাকা। এতে প্রতি বছর ১১৫ কোটি টাকা করে রাজস্ব হারায় চসিক। তবে দায়িত্ব নিয়েই পুরো পৌরকর আদায় উদ্যোগ নিয়েই ‘চমক’ দেখালেন
মেয়র শাহাদাত হোসেন।

চসিক সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪-১৯৯৫ অর্থবছর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কখনোই পঞ্চবার্ষিকী কর পুনর্মূল্যায়নের আলোকে চসিকের প্রস্তাবিত পুরো পৌরকর পরিশোধ করেনি। সাবেক মেয়রদের অনেকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। পরে বর্তমান মেয়র শাহাদাত হোসনে দায়িত্ব নেওয়ার পর পাওনা পরিশোধে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন। বন্দর কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হন মেয়র শাহাদাত।

এর প্রেক্ষিতে গত ৬ এপ্রিল নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নজরুল ইসলাম আজাদ স্বাক্ষরিত চিঠি দেওয়া হয় চবক চেয়ারম্যানকে। এতে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব মতে পৌরকর বাবদ চাওয়া ১১৫ কোটি টাকার মধ্যে জয়েন্ট সার্ভে কমিটির রিপোর্টের সুপারিশের ভিত্তিতে কম-বেশি সমন্বয়ের শর্তে আপাতত ১শ কোটি টাকা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে প্রদান করা যেতে পারে। বিষয়টি
নির্দেশক্রমে জানিয়ে দেওয়া হলো।’

এসময় মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে নগরবাসীর মৌলিক অধিকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে বছরে ৭০ কোটি টাকার বেশি ভর্তুকি দিচ্ছি আমরা। দায়িত্ব গ্রহণের পরই চসিকের এ ধরনের সেবাগুলো সচল রাখতে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে জোর দেই। বন্দর থেকে পৌরকর আদায়ের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে তদবির করি। মন্ত্রণালয় এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের সহায়তা এই ১শ কোটি টাকা পাওয়ার ফলে নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি নাগরিক সেবা বাড়াতে পারবে চসিক।’

এসময় বন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন মেয়র ও বন্দর চেয়ারম্যান। বন্দর চেয়ারম্যানের অনুরোধে মেয়র বন্দর কেন্দ্রিক ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চসিকের প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমানকে নির্দেশনা দেন। এছাড়া, বন্দরকে সচল রাখতে চসিক সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন চসিক মেয়র শাহাদাত হোসেন।