Image description

নাটোরের লালপুরে প্রায় ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) পাবনা-নাটোর-সিরাজগঞ্জের (পানাসি) ভূগর্ভস্থ পানির মাধ্যমে সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পাম্প ঘর ও পাইপ লাইন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালু এবং রড-সিমেন্ট পরিমাণে কম দিয়ে যেনতেনভাবে কাজ করা হচ্ছে। তবে কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করে পুনরায় নিয়মানুযায়ী কাজ সম্পন্ন করবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

লালপুর উপজেলা বিএডিসি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় 'পানাসি' সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস লিমিটেডের নরেন্দ্রপুর, গবিন্দপুর ও পরীক্ষামূলক কৃষি খামারে ছয়টি অকেজো বোরিং চালুর উদ্যোগ নেয় বিএডিসি। ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ১০ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিটি পাম্প ঘর ও পাইপলাইন নির্মাণে কাজ পায় মেসার্স এজে ব্রাদার্সসহ পৃথক কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে পাঁচটি কাজ প্রায় শেষের দিকে, অন্যটির কাজ এখনো শুরু হয় নি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইতিমধ্যে অধিকাংশ পাম্প ঘর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। চলছে পাইপ লাইনের আউটলেট নির্মাণের কাজ। সেখানে পরিমাণে খুবই সামান্য সিমেন্ট, ধুলার ন্যায় খোয়া ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে ঢালাইয়ে। তাৎক্ষণিক প্লাস্টারই খসে খসে পড়ছে, সেটি বারবার মিস্ত্রি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। এছাড়া প্রতিটি আউটলেটে ১০ মিলি মিটার রডের ৬ ইঞ্চি বর্গ করে স্পেস তৈরি করে ব্যবহারের কথা থাকলেও সেটা করা হচ্ছে না। মাত্র ৮ মিলিমিটারের ২/১টি রড ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে হাত দিয়ে চাপ দিলেই আউটলেটের ওয়াল ভেঙে পড়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক রকি হোসেন বলেন, এই কাজ অনিয়মে ভরা। তদারকি নেই। কাজের সময় ইঞ্জিনিয়ার থাকেন না। ফলে যাচ্ছেতাই কাজ করেন ঠিকাদার। বালুর পরিবর্তে ভরাট দিচ্ছে, পচা খোয়া দিয়ে কাজ করছে। এভাবে কাজ করলে তা অল্প দিনে নষ্ট হয়ে যাবে। কৃষিখাতে এমন অনিয়ম, দুর্নীতি মানা যায় না। আমরা চাই সম্পূর্ণ কাজ ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করা হোক।

এবিষয়ে জানতে চাইলে সাব-ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম কাজে অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, মিস্ত্রি দক্ষ না হওয়ায় এখন সার্বিক ভাবেই ভুল হয়ে গেছে। ভুল ত্রুটি এবারের মত ক্ষমা করে দেন। কাজ পুনরায় সঠিক ভাবে করে দিব।

এবিষয়ে বিএডিসির বড়াইগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী (ক্ষুদ্র সেচ) জিয়াউল হক বলেন, কাজের স্থানে গিয়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী পেলে কাজ বন্ধ করে মালামাল ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। কাজের মান নিয়ে আপস নেই।