
চাঁদপুরের কচুয়া-হাজীগঞ্জ-গৌরিপুর বাইপাস সড়কের কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় রাস্তার পাশে দীর্ঘদিন ধরে স্তূপ করে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। বাইপাস সড়কের ব্যবসায়ী, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মী, এমনকি আশপাশের ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালগুলোও যত্রতত্র ময়লা ফেলায় ওই স্থানটি এখন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
এতে মশা-মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়াসহ ছড়াচ্ছে নানা রোগ জীবাণু। ময়লার দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হওয়ায় সড়কের পাশ দিয়ে চলাচলকারী পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পৌর কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।
পৌরসভার সূত্রে জানা যায়, পৌরসভায় বর্তমানে ৬ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ২৪টি ভ্যান থাকলেও কচুয়ায় ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো ডাম্পিং স্টেশন নেই। ফলে প্রতিদিন সকালে ভ্যান থেকে ময়লা সড়কের পাশে ও খালে ফেলা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় কয়েকশ' দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাসপাতাল ও বসতবাড়ি রয়েছে। জনবহুল এই সড়কের পাশেই দোকান, হাসপাতাল ও পৌরসভার কর্মীরা আবর্জনা স্তূপ করে রাখায় পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
আবর্জনায় আগুন ধরিয়ে পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট ধোঁয়ায় আরও দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ময়লার দুর্গন্ধে এলাকার মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় বাইপাস সড়কের আশপাশের বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
কোর্ট বিল্ডিং এলাকার বাসিন্দা আজিজুল জানান, তার বাড়ির সামনে বছরের পর বছর ধরে ময়লা ফেলা হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুর্গন্ধে রাতে ঘুমানো যায় না এবং পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. জাহিদ হোসাইন জানান, ময়লার দুর্গন্ধ ও দূষিত বায়ু শ্বাসনালীর প্রদাহসহ বিভিন্ন জটিল রোগ সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্কাশন না হলে পানি দূষিত হয়ে কলেরা, ডায়রিয়া ও টাইফয়েডের মতো রোগ ছড়াতে পারে।
কচুয়া পৌর সচিব মো. ফখরুল ইসলাম জানান, ডাম্পিং স্টেশনের জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। সড়কের পাশে ময়লা ফেলার বিষয়টি তার জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (পৌর প্রশাসক) মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী জানান, রাস্তার পাশে যত্রতত্র ময়লা ফেলার কোনো সুযোগ নেই। দ্রুত ময়লা অপসারণ এবং ভবিষ্যতে এটি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় ডাম্পিংয়ের জন্য জমি কেনার প্রক্রিয়া চলছে এবং শীঘ্রই ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Comments