
ঘুম থেকে ওঠার পর প্রায় সবার চোখেই যে পিচুটি হয়, সেটি কতটা ভালো বা খারাপ সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিও সম্প্রতি টিকটিকে ভাইরাল হয়েছে। ১৫ লাখ বারের বেশি ভিউ হওয়া ওই ভিডিওতে ডঃ হিউবারম্যান ব্যাখ্যা করেছেন যে চোখের পিচুটি একটি লক্ষণ যা প্রমাণ করে ‘আপনার চোখ ঘুমের মধ্যে সফলভাবে ব্যাকটেরিয়াকে পরাজিত করেছে’।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং যখন আপনি সেগুলো মুছে ফেলেন, তখন আপনি রাতের ঘুমন্ত অবস্থায় যুদ্ধে জেতার পর সেই সৈন্যদের মৃতদেহ সরিয়ে ফেলছেন।’
প্রচুর টিকটক ভিউয়ার ডঃ হিউবারম্যানের এই ব্যাখ্যায় কমেন্টস সেকশনে তাদের বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
একজন লিখেছেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমি ঘুমের মধ্যে কাঁদছিলাম।’
অন্যরা চোখের পিচুটি স্বাভাবিক জেনে ডঃ হিউবারম্যানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তবে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, ডঃ হিউবারম্যানের এই টিকটক ভিডিওটি চোখের পিচুটি সম্পর্কে সব তথ্য প্রকাশ করেনি।
নিঃসরিত পিচুটি কেবল ব্যাকটেরিয়া নয়। বরং এর সঙ্গে শ্লেষ্মা, অশ্রু এবং পুরানো ত্বকের কোষও মেশানো থাকে।
দিনের বেলা, এই নিঃসরণ অশ্রুর মাধ্যমে কেবল পলক ফেলার মাধ্যমেই সরে যায়। কিন্তু রাতে, চোখ বন্ধ থাকার সময় এটি প্রাকৃতিকভাবে চোখের কোণে জমা হয়।
তবে, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, চোখের সামান্য পরিমাণে শ্লেষ্মা স্বাস্থ্যকর।
অতিরিক্ত পরিমাণে নিঃসরণ হলে সেটি সংক্রমণ, অ্যালার্জি, শুষ্ক চোখ বা চোখের অন্য কোনও অসুখের লক্ষণ হতে পারে।
ক্লিভল্যান্ড মেডিকেল ক্লিনিক জানিয়েছে, স্বাভাবিক ঘুমের পর মানুষের চোখে যে পিচুটি দেখা দেয়, চোখের স্বাস্থ্য খারাপ হলে তার চেয়ে বেশি পিচুটি নিঃসরণি হয়।
এর সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে কনজাংটিভাইটিস (চোখ ওঠা), যা সংক্রমণ বা অ্যালার্জির কারণে সৃষ্ট একটি অত্যন্ত সংক্রামক অবস্থা, চোখের পাতায় ফোড়া এবং চোখের শুষ্কতাজনিত রোগ।
চোখ ওঠা রোগটি সাধারণত দুই চোখকেই প্রভাবিত করে এবং আক্রান্তরা চোখে দানাদার অনুভব করে, পুঁজ তৈরি করে এবং চুলকায়।
চোখের গোলকের চারপাশের ঝিল্লির রক্তনালী ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হলে মানুষ চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ব্রিটিশ ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস চোখ ওঠার ক্ষেত্রে চিকিৎসা হিসেবে কেবল ফোটানো পানিতে তুলোর প্যাড ভিজিয়ে আলতো করে চোখের পাপড়ি থেকে ময়লা পরিষ্কারের পরামর্শ দিয়েছে।
Comments