
লালমনিরহাট সদরে টোল আদায়কে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত তিন জন আহত হয়েছেন। বুধবার(২৩ এপ্রিল) রাতে লালমনিরহাট রংপুর মহাসড়কের সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা সড়ক সেতু টোলপ্লাজায় এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে গোকুন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজার রহমান রাজুকে প্রধান করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন তিস্তা টোল প্লাজার ইজারাদারের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল আলম।
মামলার এজাহারে প্রকাশ, লালমনিরহাট রংপুর মহাসড়কে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে তিস্তা নদীর উপর নির্মিত হয় তিস্তা সড়ক সেতু। লালমনিরহাট সড়ক ও জনপদ থেকে সেতুটির টোল আদায়ের ইজারা গ্রহণ করেন রানা কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুর ইজারাদার প্রতিষ্ঠান রানা কনস্ট্রাকশনের অংশীদার হিসেবে টোল আদায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল নাজু। সেতু পারাপারে মোটর সাইকেল প্রতি ১০ টাকা টোল আদায় করা হয়। সেতুটির টোলের ইজারাদার নিয়োগের সময় স্থানীয় বিএনপি ও রংপুর বিএনপির মাঝে মতবিরোধ দেখা দেয়।
বুধবার বিকেলে কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে তিস্তা সড়ক সেতু পাড় হচ্ছিলেন গোকুন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজার রহমান রাজু। এ সময় টোল না দিয়ে টোলপ্লাজা অতিক্রমের চেষ্টা করলে আদায়কারীরা সংকেত দিয়ে গাড়িগুলো থামিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে টোল আদায়ের কর্মচারীদের সাথে বিতর্ক করেন রাজু। একপর্যায়ে টোল না দিয়ে রাজু ও তার লোকজন চলে যায়।
এ বিতর্কের জেরে ওই দিন রাতে রাজু দলবল নিয়ে টোলপ্লাজায় হামলা চালিয়ে টোল ঘরের গ্লাস ভাঙচুর করে। এ সময় টোল ক্যাশে থাকা ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। তাদের ভয়ে টোল কর্মচারীরা ক্যাশ ঘরে আত্মরক্ষা করলে সেখানেও হামলা চালিয়ে ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এতে তাদের হামলায় ম্যানেজার সুরুজ্জামান, টোল কর্মচারী জুয়েল ও মোখলেস উদ্দিন রক্তাক্ত জখম হন। পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় তিস্তা সড়ক সেতুর টোল ইজারাদারি প্রতিষ্ঠান রানা কনস্ট্রাকশনের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল আলম বাদি হয়ে গোকুন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজার রহমান রাজুকে প্রধান করে ১৫ জনের নামসহ আরও অজ্ঞাত ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার লালমনিরহাট সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
সেতুর ইজারাদারি প্রতিষ্ঠান রানা কনস্ট্রাকশনের অংশীদার রংপুর জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল নাজু অভিযোগ করে বলেন, রাজুর নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে টোল কর্মচারীদের মারধর ও ১৪ লাখ টাকা লুট করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত মাহফুজার রহমান রাজু এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা আমাদেরকে মামলায় ফাঁসাতে ১৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের নাটক তৈরি করেছে। তিনি সঠিক তদন্ত দাবি করেন।
অপরদিকে ঘটনার সময় টোলপ্লাজায় দায়িত্বরত এসআই মো. রওশন জানান, অল্প সময়ের মধ্যে দুই পক্ষ মারামারি করে একপক্ষ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সিসি টিভির ফুটেজে সঠিক প্রমাণ পাওয়া যাবে।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরনবী বলেন, বাদীর এজাহারটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
Comments