Image description

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে ৬৪৭ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ২৪১ জন ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকার, বাকিরা ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকার। চলতি বছর (২০২৫) এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪০ হাজার ৪৬১ জন। এর মধ্যে ৩৮ হাজার ২৫২ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন, এবং মৃত্যু হয়েছে ১৬৭ জনের।

২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৫৭৫ জনের। এর আগে, ২০২৩ সালে দেশে ডেঙ্গুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন আক্রান্ত এবং এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গু এখন আর মৌসুমি রোগ নয়, বছরজুড়েই এর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এটি আরও বেড়ে যায়।

বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান বলেন, “ডেঙ্গু এখন সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটি বাড়ছে। প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সর্বত্র জনসচেতনতামূলক প্রচার চালাতে হবে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।”

কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী মনে করেন, শুধু জেল-জরিমানা বা সচেতনতা বৃদ্ধি দিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।” তিনি মশার প্রজননস্থল ধ্বংস এবং পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার ওপর জোর দেন।

ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা, পানি জমতে না দেওয়া এবং মশারি ব্যবহারের মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্থানীয় সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, সমন্বিত প্রচেষ্টা ছাড়া ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে।

ডেঙ্গুর এই ক্রমবর্ধমান প্রকোপ জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সরকার, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলার আহ্বান জানানো হচ্ছে।