মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন এইচ-১বি ভিসা নীতির লক্ষ্য হলো, যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ বিদেশি কর্মীদের অস্থায়ীভাবে আনা, যাতে তারা আমেরিকানদের উচ্চ দক্ষতার কাজে প্রশিক্ষণ দিতে পারে। বিদেশি শ্রমিকের ওপর দীর্ঘমেয়াদি নির্ভরশীলতা চান না ট্রাম্প, এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি আগ্রাসী অভিবাসন নীতি সংস্কারের পথে হাঁটছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প বলেছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমেরিকাকে বিদেশি প্রতিভা আনতেই হবে। তার ঠিক পরদিনই বেসেন্ট এই মন্তব্য করলেন।
ফক্স নিউজের সাংবাদিক ব্রায়ান কিলমেইডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, ট্রাম্পের নতুন এইচ-১বি ভিসা নীতি একধরনের ‘জ্ঞান স্থানান্তর উদ্যোগ’, যার উদ্দেশ্য আমেরিকার উৎপাদন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করা। তিনি বলেন, এই নতুন পন্থার লক্ষ্য হলো কয়েক দশকের আউটসোর্সিং বা উৎপাদন স্থানান্তরের পর যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন শিল্পকে পুনর্গঠন করা।
বেসেন্ট আরও বলেন, "২০ থেকে ৩০ বছর ধরে আমরা নিখুঁত উৎপাদনশিল্পের কাজ বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছি... এখন হুট করে আমরা বলতেই পারি না যে, কাল থেকেই আমরা নিজেরা জাহাজ বানাব। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প ফিরিয়ে আনতে চাই। অ্যারিজোনায় বড় বড় স্থাপনাগুলো গড়ে উঠবে।"
তিনি যোগ করেন, "প্রেসিডেন্টের ভাবনাটা হলো—বিদেশি বিশেষজ্ঞদের তিন, পাঁচ বা সাত বছরের জন্য আনা হবে, যাতে তারা আমেরিকান শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিতে পারে। এরপর তারা নিজ দেশে ফিরে যাবে, আর তখন আমেরিকান শ্রমিকেরাই সেই দায়িত্ব নেবে।"
বিদেশি শ্রমিকেরা আমেরিকানদের চাকরি কেড়ে নেয়—এমন আশঙ্কার জবাবে বেসেন্ট বলেন, "এই মুহূর্তে কোনো আমেরিকানই ওই কাজ করতে পারবে না—এখনো নয়।" তিনি আরও বলেন, "আমরা বহু বছর ধরে এখানে জাহাজ বা সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করিনি। বিদেশি অংশীদাররা আসবে, আমেরিকানদের শেখাবে—এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য।"
বেসেন্ট ব্যাখ্যা করেন, ট্রাম্প টিমের এই নতুন এইচ-১বি নীতি রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ—যার উদ্দেশ্য হলো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলোকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আমদানি নির্ভরতা কমানো।
এ ছাড়া বেসেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের অর্থনৈতিক কর্মসূচি নিয়েও কথা বলেন। তিনি নিশ্চিত করেন, বছরে ১ লাখ ডলারের নিচে আয় করা পরিবারের জন্য ২ হাজার ডলারের শুল্ক-রিবেট বা ফেরতের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। বেসেন্ট বলেন, "প্রেসিডেন্ট ২ হাজার ডলারের রিবেট নিয়ে কথা বলছেন...এটি এমন এক পদক্ষেপ, যাতে পরিবারগুলো শক্তিশালী বাণিজ্য নীতির সুফল সরাসরি পায়।"
বেসেন্ট বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি হলো ‘প্যারালাল প্রস্পারিটি বা সমান্তরাল সমৃদ্ধি’ যেখানে ওয়াল স্ট্রিট ও মেইন স্ট্রিট একসঙ্গে এগিয়ে যাবে। আর এটি নির্ভর করছে ট্রেজারি বাজারকে গভীর, তরল ও স্থিতিশীল রাখার ওপর।




Comments