Image description

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে তীব্র জনবল সংকটের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে দাপ্তরিক ও মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম। প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় চিকিৎসা, টিকাদান ও রোগ নিয়ন্ত্রণ সেবা পেতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় খামারি ও পশুপালনকারীরা। জনবল স্বল্পতায় একজন কর্মকর্তার ওপর পুরো দপ্তরের দায়িত্ব চাপায় ব্যাহত হচ্ছে নিয়মিত সেবা।

দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী একজন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, দুইজন ভেটেরিনারি সার্জন, একজন ফার্মাসিস্ট, দুইজন মাঠকর্মী ও প্রয়োজনীয় সহায়ক জনবল থাকার কথা। অথচ বর্তমানে দুমকিতে কর্মরত আছেন মাত্র একজন ভেটেরিনারি সার্জন এবং একজন সহকারী। ফলে জরুরি রোগ নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি এবং পোল্ট্রি ও গবাদিপশু পরিদর্শন কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

বিশেষ করে শীত মৌসুমে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এ সময় মাঠপর্যায়ে তদারকি টিম না থাকায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন উপজেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরা।

দুর্ভোগের কথা জানিয়ে মজিবর মৃধা নামের এক গরুর খামারি বলেন, ‘গরুর হঠাৎ জ্বর বা অসুখ হলে ডাক্তার ডাকলে পাওয়া যায় না। ফোনেও অনেক সময় তাদের পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। এক উপজেলায় মাত্র একজন ডাক্তার দিয়ে আমরা কীভাবে চলব?’

একই অভিযোগ পোল্ট্রি খামারি বেল্লাল হোসেনের। তিনি বলেন, ‘মুরগির রোগ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। কিন্তু সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে অনেক সময় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে দুমকি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘জনবল সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জরুরি কাজগুলো সামলাতে হচ্ছে। জনবল না থাকায় মাঠপর্যায়ে নিয়মিত নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না। তবুও সীমিত সাধ্যের মধ্যে আমরা খামারিদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

সার্বিক বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, শুধু দুমকি নয়, জেলার সব উপজেলাতেই কম-বেশি এমন সংকট রয়েছে। শূন্যপদ পূরণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে শূন্য পদে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

স্থানীয়দের দাবি, কৃষিনির্ভর এই উপজেলার পশুপালন খাতের উন্নয়ন ও খামারিদের বাঁচাতে দ্রুত জনবল সংকট নিরসন করে দপ্তরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা জরুরি।