Image description

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বিএনপিকে ‘গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী ধারার’ দুই শক্তি হিসেবে অভিহিত করে দল দুটির মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তবে এই ঐক্যের জন্য তিনি বিএনপির সংস্কার ও পরিবারতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসার ওপর জোর দিয়েছেন। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটকে কোনো দল বা ব্যক্তির সংকট নয়, বরং গভীর রাষ্ট্রীয় সংকট হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, গত পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রক্সি যুদ্ধের ক্ষেত্র ছিল। যার এক পক্ষে ছিল ‘মুজিববাদ’ এবং অন্য পক্ষে ‘মওদূদীবাদ’। এই দ্বৈত আধিপত্যবাদের কারণে দেশের রাষ্ট্রকাঠামো, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি ভেঙে পড়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, লক্ষ্য ছিল প্রক্সি রাজনীতির দাসত্ব থেকে মুক্তি। কিন্তু ছাত্রশিবির কিছু কল্যাণমূলক কাজের আড়ালে পদ-পদবি ও আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে ছাত্রসমাজকে জামায়াতের হাতে তুলে দিয়েছে। ফলে দেশ আবারও পুরনো প্রক্সি রাজনীতির ঘূর্ণিপাকে পড়েছে।

বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে নাসীরুদ্দীন বলেন, এই দুই শক্তিকে এক হয়ে মুজিববাদ ও মওদূদীবাদের কর্তৃত্ববাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। তবে এই ঐক্যের জন্য তিনি কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছেন:

১. বিএনপিকে পরিবারতন্ত্রের ছায়া ও পুরনো সীমাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
২. রাষ্ট্র বিনির্মাণে সংস্কারের পথে হাঁটতে হবে।
৩. ভারতের প্রভাব-রাজনীতির দিকে ঝুঁকে থাকা অংশকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মূলধারায় ফিরতে হবে।

তিনি কংগ্রেসের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ভারতের কংগ্রেসও পরিবারতন্ত্র ভেঙে পুনর্গঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। বিএনপির নতুন প্রজন্ম জেগে উঠলে তারাও এই গণ্ডি ভাঙতে পারবে।

এনসিপির ৪ দফা অবস্থান:
ঐক্য হোক বা না হোক, এনসিপি তাদের আদর্শিক লড়াই চালিয়ে যাবে বলে জানান নাসীরুদ্দীন। তিনি দলের চারটি আপসহীন অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন:

বাংলাদেশের পুনর্গঠন।

সার্বভৌম মর্যাদা ও জাতীয়তাবাদ।

ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ।

নাগরিক অধিকার, স্বাধীনতা ও সম্মান।

পরিশেষে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে প্রথমেই এর রাজনীতিকে বিদেশি প্রক্সির ছায়া থেকে মুক্ত করতে হবে।