
রংপুরে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গরুর আবাসিক হোটেল। রংপুর নগরীর প্রবেশদ্বার মর্ডার্ন মোড়ের ধর্মদাশ বার আউলিয়া এলাকায় এই আবাসিক হোটেলের অবস্থান। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে রংপুরের বিভিন্ন হাটে গরু ক্রয় করে ঢাকাসহ অন্যান্য স্থানে নেওয়ার আগে গরুকে নিয়ে রাতযাপন করেন এই হোটেলে। এতে ব্যবসায়ীরা যেমন নির্বিঘেœ ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন তেমনি তাদের গবাদি পশুর সেবাও নিশ্চিত হচ্ছে। এই আবাসিক হোটেলে রয়েছে গরুর জন্য নির্ধারিত স্থান এবং থাকা-খাওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নগরীর বিখ্যাত লালবাগহাট, বড়াইবাড়ি হাট, শঠিবাড়িহাট, আমবাড়ি হাট, বেতগাড়ি, মধুপুর, খানসামা, বুড়িরহাট, তারাগঞ্জ, আফতানগরসহ বিভিন্ন হাট থেকে ক্রেতারা গরু ক্রয় করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান তারা। অনেক ব্যবসায়ী এই আবাসিক হোটেলে এক অথবা দুই রাত গরুকে বিশ্রাম দিয়ে তারপরে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। প্রতিটি গরু বাবদ ৬০ টাকা করে নেওয়া হয়। গড়ে ১০০ গরু থাকে এই আবাসিক হোটেলে। রাতযাপনের পরে এখান থেকে ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হয় গরু।
গরুর বেপারি জাহাঙ্গীর আলম, কাশেম মিয়া, ওয়াজেদ মিয়া, জসিম মিয়া জানান, এখানে গরু রেখে অনেকটা নিশ্চিন্ত হওয়া যায়। একরাত বিশ্রাম নেওয়ার পরে দেশে বিভিন্ন স্থানে গরু নিয়ে যেতে সুবিধা হয়। তাই আবাসিক হোটেলে গরু রাখছি।
এই আবাসিক হোটেলে কর্মচারী রয়েছে ৪ জন। তারা জানান কোরবানি ঈদ এলে এই আবাসিক হোটেলে ব্যবসা আরও জমজমাট হবে। হোটেলের কর্মচারী আলমগীর হোসেন ও রফিকুল জানান তারাই গরুর দেখভাল করেন। এ কাজ করতে তাদের ভালোই লাগে।
এই আবাসিক হোটেল মালিক মো. আসানুর রহমানের বাড়ি নগরীর দেওডোবা এলাকায়। তিনি মর্ডার্ন মোড় সংলগ্ন এলাকায় এই হোটেল দিয়েছেন ৭- ৮ বছর আগে। তিনি বলেন, এখন শীতকাল তাই গরুর আমদানি কম। তবে এখন প্রতিদিন ৩০-৪০টি গরু তার এই হোটেলে থাকে।
স্থানীয় ইসলাম বলেন, আবাসিক হোটেল গড়ে ওঠার ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তেমনি ব্যবসায়ীদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে নিরাপদ পরিবেশে পশু কেনাবেচার জন্য রাখার সুযোগ। ঝড়-বৃষ্টির সময় এসব গরু নিয়ে খুব বেকায়দায় পড়ত বেপারিরা। হোটেল হওয়াতে রোদ-ঝড়-বৃষ্টিকে গরুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
Comments