তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে করা চূড়ান্ত আপিলের শুনানি চতুর্থ দিনের মতো চলছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
আদালতে জামায়াতে ইসলামীর মহাসচিবের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করছেন আইনজীবী শিশির মনির।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের তৃতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালতে ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী। গত ২২ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। ওইদিন রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে শুনানি শেষ করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। তার আগের দিন ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি ও রুল প্রদানের পর হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রিটটি খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয় এবং ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারীরা আপিল দায়ের করেন। আপিল বিভাগে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপসহ অন্যান্য পরিবর্তন আনা হয় পঞ্চদশ সংশোধনী আইনে, যা ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশ করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর রায় পুনর্বিবেচনার জন্য সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি আবেদন করেন। অন্য চারজন হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া এবং জাহরা রহমান। এরপর ১৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এ ছাড়া, গত বছরের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও একই আবেদন দাখিল করেন। পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।




Comments