বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে যে কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতে ১৪টি দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সর্তকতা দিয়েছে সরকার। গত ৩ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের ইমিগ্রেশন-শাখার উপসচিব কানিজ ফাতেমা স্বাক্ষরিত বিদেশে বাংলাদেশের সব মিশনের রাষ্ট্রদূতদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, সিরিয়া, ইয়েমেন, নাইজেরিয়া, ইরাক, সোমালিয়া, লেবানন, আফগানিস্তান, সুদান, লিবিয়া, চাদ, মালি, তিউনিসিয়া, ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের মতো দেশগুলোর আবেদনকারীদের জমা দেওয়া প্রাসঙ্গিক নথিপত্র যথাযথ যাচাইয়ের পর ভিসা দেওয়া যেতে পারে।
সম্প্রতি বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন নিয়ে গত ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সভায় সভাপতিত্ব করেন।
ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সব বিদেশি মেহমানদের তালিকা, নাম, পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয়তা, জন্ম তারিখ, পাসপোর্ট ইস্যুর তারিখ এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখসহ সব তথ্য আগামী ২০ ডিসেম্বরের আগে শুরায়ে নিজাম বা তাবলিগ জামায়াত বাংলাদেশ কর্তৃক এসবিকে সরবরাহ করতে হবে।
বিশ্ব ইজতেমায় আসা বিদেশি মেহমানদের অনুকূলে সাধারণভাবে ৩০ দিন পর্যন্ত ভিসা দেওয়া হয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে তাবলিগ জামাতের সুপারিশের ভিত্তিতে এক চিল্লার জন্য ৫০ দিন এবং তিন চিল্লার জন্য ১৫০ দিন ভিসা দিতে হবে। বিদেশি মেহমানদের ভিসা দেওয়ার আগে শুরায়ে নিজাম বা তাবলিগ জামায়াত বাংলাদেশের আমন্ত্রণপত্র এবং সংশ্লিষ্ট দেশের মারকাজের সুপারিশ যাচাই করে সঠিক পাওয়া গেলে ভিসা দিতে হবে। টিআই ভিসা নিয়ে মিয়ানমারের নাগরিকরা ইজতেমায় আসতে পারবে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভার সিদ্ধান্ত আরও জানা যায়, যেসব দেশের উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে ওই সব দেশের মেহমানদের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে তাবলিগ জামায়াত শুরা কর্তৃক নিরুৎসাহিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ভিসা অন-অ্যারাইবল দেওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ভিসা অন এ্যারাইভাল, প্রদেয় ভিসার মেয়াদ, নো ভিসা ফি রিকয়ার্ড, বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতির যোগাযোগ নাই এমন দেশের মুসল্লিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাবলিগ জামাতের মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়েরের অনুসারীরা (শুরায়ী নেজাম) আয়োজন করবেন বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে। আর দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে আগামী ৭-৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাওলানা সাদের অনুসারীরা আয়োজন করবেন। দুই গ্রুপেরই ইজতেমা গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর পাড়ে অনুষ্ঠিত হবে।
মানবকণ্ঠ/আরআই
Comments