গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, ড. ইউনূস তাদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন এবং জামায়াত-এনসিপিকে ‘এ ক্যাটাগরিতে’ রাখায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বুধবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক এহসান মাহমুদের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে নুর এসব কথা বলেন।
নুর অভিযোগ করেন, ড. ইউনূস তিনটি দল গঠন করে জামায়াত-এনসিপিকে ‘এ ক্যাটাগরি’ দিচ্ছেন, অথচ গণঅধিকার পরিষদকে ‘বি ও সি ক্যাটাগরি’তে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি একাধিকবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, তাদের পরামর্শ সরকার নিতে পারে। কিন্তু জামায়াত-এনসিপিকে কীভাবে একই ক্যাটাগরি করে যাচ্ছে, এটাই সবচেয়ে বড় অন্যায়।
তিনি আরও বলেন, "যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রক্ত দিয়েছে, তারা বি-সি ক্যাটাগরিতে, আর জামায়াত-এনসিপিকে রাখা হচ্ছে এ ক্যাটাগরিতে। এটা অন্যায়, এটা প্রতারণা।"
নুর জানুয়ারি মাসেই নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তার মতে, ফেব্রুয়ারির জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই। নির্বাচন যত দেরি হবে, তত বিচার আর সংস্কার নিয়ে গোলমাল বাড়বে। তাই নতুন বছরের প্রথম মাসেই নির্বাচন হওয়া উচিত।
বিচার বিভাগের কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, "গত এক বছরেও বিচারের ক্ষেত্রে আমাদের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি আমরা লক্ষ করিনি। পত্রপত্রিকায় দেখেছি, একজন বিচারপতির আদালত থেকে চার ঘণ্টায় ৮০০ জামিন হয়েছে। বিচার বিভাগ নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না, এটা ঠিক, কিন্তু যৌক্তিক প্রশ্ন তো তোলা দরকার।"
তিনি আরও দাবি করেন, "এই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিল, ব্যবসায়ী শ্রেণির যারা লুটপাট করেছে, তাদেরও বিচার হওয়া উচিত। শুধু রাজপথে যারা আক্রমণ করেছে, তাদের বিচার হলে হবে না।"
ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে নুর বলেন, "এই সরকার ছাত্রসমাজে ফাটল ধরিয়েছে, প্রতারণা করেছে। আমরা বিশ্বাস নিয়ে তার পাশে ছিলাম, কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ছাত্ররা রক্ত দিয়ে এই পরিবর্তন এনেছে, অথচ তাদের পাশে দাঁড়ানো হয়নি।"
নুরুল হক নুর সরকারের দমননীতিরও অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, "হাসিনার আমলেও আমরা এতটা আক্রান্ত হইনি, যতটা এই সরকারের আমলে হয়েছি। আপনার সরকারের আমলে আমরা যেভাবে আক্রান্ত হয়েছি, তার বিচার করতে হবে।"
তিনি সরকারের প্রতি সব দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, সামরিক বাহিনী-সব জায়গায় যারা ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।




Comments