চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে 'বিশেষ বিবেচনায়' ভিপি প্রার্থী নিয়ামত উল্লাহ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন নীতি অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে হলে আসন বরাদ্দ দেওয়া হলেও, অভিযোগ উঠেছে যে অপেক্ষাকৃত কম ফল নিয়েও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থান করছেন নিয়ামত উল্লাহ ওরফে আবরার ফারাবী। তিনি ওই হলের ইসলামী ছাত্রশিবির শাখার সভাপতি এবং সোহরাওয়ার্দী হল থেকে শিবির–সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি (সহসভাপতি) প্রার্থীও হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র থেকে জানা যায়, নিয়ামত উল্লাহর স্নাতক পর্যায়ের সিজিপিএ মাত্র ২ দশমিক ৬৫, যেখানে হল প্রশাসনের প্রকাশিত মেরিট তালিকায় সর্বনিম্ন ৩ দশমিক ২৯ সিজিপিএ নিয়ে শিক্ষার্থীরা সিট পেয়েছেন।
নিয়ামত উল্লাহ নিজে আসন পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, "আমার বাসা দূরে হওয়ার কারণে আমি প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলাম। তখন আমাকে আসনে থাকার অনুমতি দিয়েছে।"
এ বিষয়ে ইসলামি ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, "নিয়ামত উল্লাহ বাসা দূরত্বের কারণে বিশেষ বিবেচনায় আবেদন করেছিলেন। প্রত্যেক হলে প্রায় ১০টি আসন এইভাবে বরাদ্দ থাকে। সেখান থেকেই তিনি আসন পেয়েছেন।"
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন জানান, বিশেষ বিবেচনায় শিক্ষার্থী কেবল ডাবলিং আসন পেতে পারে, একক আসন নয়। তিনি আরও বলেন, "কোনো শিক্ষার্থীকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে একক আসন দেওয়ার সুযোগ নেই। ডাবলিংয়ের ক্ষেত্রে হলে প্রভোস্টের অনুমতিতে তা সম্ভব, কিন্তু সেটিও বৈধ আসন হিসেবে গণ্য হয় না।"
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী থাকলেও হলে আবাসিক সুযোগ পায় মাত্র আট হাজার। ক্যাম্পাসের আশপাশে কটেজ ও ভাড়া বাসায় থাকেন অন্তত পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী। আবাসন সংকটে ভোগা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নিয়ম মেনে সিট না পেলেও রাজনৈতিক দাপটেই বৈধ শিক্ষার্থী হিসেবে হলে অবস্থান করছেন নিয়ামত উল্লাহ।
এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, "নিয়ামত উল্লাহ মেরিটে সিট পাননি। হলে প্রভোস্টের বিবেচনায় কিছু সিট বরাদ্দ থাকে। নিয়ামত উল্লাহ হলে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত, সে সুবাদে আমাকে (প্রভোস্ট) বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি তাকে সিট দিয়েছি।"
নিয়ামত উল্লাহ অতীতে ছাত্রলীগের সঙ্গেও রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের সমন্বয় কমিটিতে দায়িত্ব পালন করলেও একই সময়ে শিবিরের হল সভাপতি হিসেবেও ছিলেন তিনি।
Comments