Image description

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী একটি রেস্তোরাঁয় রাতের খাবার খাওয়ার সময় ‘ছাত্রলীগ’ আখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেট সংলগ্ন কাজলা ক্যান্টিনে একদল দুর্বৃত্ত মুখে কালো কাপড় বেঁধে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালায়। এতে তিনজন শিক্ষার্থী আহত হন।

হামলার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবিতে মধ্যরাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন আহতদের সহপাঠীরা।

আহত শিক্ষার্থীরা হলেন—ফিন্যান্স বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আল ফারাবী, একই বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের তাহমিদ আহমেদ বখশী এবং নাট্যকলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ। তাদের মধ্যে দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) এবং একজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।"

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা বলেন, রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলায় অবস্থিত 'কাজলা ক্যান্টিনে' রাতের খাওয়া-দাওয়া করছিলেন ফারাবি ও তার সঙ্গে কয়েকজন। এসময় ১০-১৫টি মোটরসাইকেলে করে মুখে কালো কাপড় বেঁধে এবং হেলমেট পরিহিত একটি দল রেস্টুরেন্টে আসে। তাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের মাঝে ছবি দেখিয়ে একজনের খোঁজ করেন।

এরপরই তারা এলোপাথাড়ি মারধর ও হামলা শুরু করেন। তাদের ছাতে হাতুড়ি, রড, রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র দেখা যায়। সেখানে মারধর করে ফারাবি ও বখশীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে পৌনে ১২টার দিকে ফারাবিকে বিনোদপুর এলাকায় বেতার মাঠের পাশে এবং বখশীকে হবিবুর রহমান হলের সামনের থেকে উদ্ধার করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘কাজলায় শিক্ষার্থীদের ওপর মুখে কাপড় বেঁধে এবং হেলমেট পরে আসা কয়েকজন হামলা করে। দুই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশ কার্যক্রম সন্তোষজনক ছিল না।’

উদ্ধার হওয়ার পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তামজিদ হাসান বখশী বলেন, ‘তারা আমাকে রেস্টুরেন্টের সামনে ফেলে আমাকে পিটায় এবং আমাকে রিকশায় করে তুলে নিয়ে সুইটের মোড়ের দিকে নিয়ে যায়। পরে সেখানে আমাকে অন্ধকারে বসায় এবং নানান প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে। এর ভেতর একটি কল আসে এবং তাদের বলে 'আসলটাকে' পেয়েছি। পরে আমি বলি আমি ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নই। আমি আন্দোলনের পরে ক্যাম্পাসে এসেছি। পরে আমাকে নিয়ে কাজলাস্থ মোল্লা স্কুলের এখানে রেখে চলে যায়। এ ঘটনায় কারা ছিলো আমি মুখ বেধে রাখার কারণে চিনতে পারিনি।’

আহতদের মধ্যে আল ফারাবী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হল শাখা দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতা ছিলেন। পরে জুলাই গণঅভুত্থানের সময় ১৫ জুলাইয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'সর্বপ্রথম' সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন।

আহত আরেক শিক্ষার্থী মিনহাজ রহমান বলেন, ‘আমি ক্যান্টিনে খাবার নিতে আসছিলাম। পরে সেখানে কয়েকজন মিলে একজনকে মারতে শুরু করে। আমি সেখানে ঠেকাতে গেলে তারা আমাকেও ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে।’

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, এ বিষয়ে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।