Image description

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) ও হল সংসদের প্রথম ঐতিহাসিক নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায় রচনা করতে যাচ্ছে। ১৬ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯টি কেন্দ্রের ১৭৮টি বুথে আজ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোট চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। ডিজিটাল ওএমআর (OMR) মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণনা করা হবে, যাতে দ্রুততম সময়ে নির্ভুল ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়। সকালে ভোট শুরুর আগেই কঠোর নিরাপত্তায় কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে।

নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পুরো ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ভিক্টোরিয়া পার্কে পুলিশের একটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ জানান, "নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা ও ক্যাম্পাসের আশপাশে স্পেশাল ফোর্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।"

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, "জকসু নির্বাচন নিয়ে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। অত্যন্ত সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।"

নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. জুলফিকার মাহমুদ জানান, নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং শিক্ষক-কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী এ কে এম রকিব বলেন, "শিক্ষার্থীদের অধিকারের জন্য আমরা দীর্ঘ লড়াই করেছি। আশা করছি, উৎসবমুখর পরিবেশে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন হবে।"

ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, "শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের প্রচারণায় অংশ নিয়েছে। আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।"

অন্যদিকে, ছাত্রশক্তি সমর্থিত 'ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান' প্যানেলের ভিপি প্রার্থী কিশোয়ার সাম্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে শিক্ষার্থীদের জুলুমের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।

জকসুর কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি ও জিএসসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, বিভিন্ন সম্পাদকীয় ও সদস্য পদে বিপুল সংখ্যক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে, ছাত্রী হলের ১৩টি পদের বিপরীতে ভিপি পদে ৩ জন এবং জিএস পদে ৩ জনসহ বিভিন্ন পদে অর্ধশতাধিক প্রার্থী লড়ছেন।

নির্বাচন উপলক্ষে আজ বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যেই শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল এবং ভোট গ্রহণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবস্থায় বিশেষ সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।

মানবকণ্ঠ/ডিআর