Image description

বেশ কদিন ধরেই শেরপুরের গারো পাহাড়ের বিভিন্ন সীমান্ত আলোচনায় এসেছে চোরাই পণ্য পাচারের ঘটনায়। সেখান থেকে ইতোমধ্যে বিপুল চোরাই পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে এবার পণ্য নয়, সেই সীমান্ত দিয়ে পাচার হচ্ছিল মানুষ। খবর পেয়ে অভিযানে নামে বিজিবি। ২০ শ্রমিকসহ আটক করা হয় ২৬ জনকে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) গভীর রাতে ঝিনাইগাতী হলদিগ্রাম বিওপির শালবাগান নামক স্থান থেকে বিজিবি মানব পাচারের অভিযোগে ওই ২৬ ব্যক্তিকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছে, সীমান্তে দালালদের হাতে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে দিয়ে ভারতের চেন্নাই শহরে যাওয়ার জন্য তারা সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেখানে তাদের রাজমিস্ত্রির সহকারী শ্রমিকের কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েছিল দালালরা।

বিজিবি জানায়, আটক ব্যক্তিরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর ও শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে ২০ জন শ্রমিক, দুজন মানব পাচারকারী এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশার চার চালক রয়েছেন। এ সময় ১৪টি মোবাইল ফোন, চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৫৪ হাজার ৪০০ টাকা ও একটি পাওয়ার ব্যাংক জব্দ করা হয়।

মূলত সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল পরিমাণ পণ্য আসায় বিজিবির গোয়েন্দারা নড়েচড়ে বসেন। তারা খোঁজখবর করতে গিয়ে জানতে পারেন, একটি শক্তিশালী চক্র এই অঞ্চল দিয়ে মানব পাচারে জড়িত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বেশ তৎপর হয় বিজিবি। সর্বশেষ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার গভীর রাতে বিজিবি সদস্যরা জানতে পারেন ঝিনাইগাতীর হলদিগ্রাম বিওপির শালবাগান নামক স্থান (সীমান্ত পিলার ১১১০) দিয়ে একটি বড়োসড়ো মানব পাচার হবে। এই তথ্য পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে সেখানে অবস্থান নেন তারা। রাত ৩টার দিকে চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে ২৮-৩০ জন ওই স্থানে আসেন সীমান্তের ওপারে যাওয়ার জন্য। এ সময় বিজিবি তাদের ঘিরে ফেলে এবং আটক করে।

৩৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদি হাসান গণমাধ্যমকে জানান, গত এক বছরে বিজিবি সীমান্তে কার্যক্রম ব্যাপক বৃদ্ধি করেছে। ফলে চোরাই পণ্যের পাশাপাশি মঙ্গলবার বড় একটি মানব পাচারের চালান আটকে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মানবপাচার চক্রের দুই সদস্য, ২০ শ্রমিক ও ৪ জন অটোরিকশা চালককে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঝিনাইগাতী থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। গারো পাহাড়ের বিশাল এলাকায় সীমিত জনবল নিয়ে বিজিবি পাচার বন্ধে কাজ করছে। এ বিষয়ে তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও লোকজনকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।