Image description

দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে পা রেখেই যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী নীতি নিয়ে কড়া প্রশ্ন তুললেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র যখন নিজেই রাশিয়া থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কিনছে, তখন ভারতের রুশ তেল কেনার বিরোধিতা করা বা চাপ সৃষ্টি করাটা ‘অবিচার’।

নয়াদিল্লিতে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা পর সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র নিজেই আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে। সেটাও তো একধরনের জ্বালানিই। যুক্তরাষ্ট্রের যদি আমাদের জ্বালানি কেনার অধিকার থাকে, তবে ভারতের সেই সুযোগ থাকবে না কেন? এই প্রশ্নটি গভীরভাবে বিশ্লেষণের দাবি রাখে। আমি বিষয়টি নিয়ে এমনকি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও আলোচনায় প্রস্তুত।”

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ভারত রাশিয়ার তেলের অন্যতম বড় ক্রেতায় পরিণত হয়। তবে সস্তায় এই তেল কেনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করেছে। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, রুশ তেল কিনে ভারত আদতে পুতিনের যুদ্ধকেই অর্থায়ন করছে।

মার্কিন এই পদক্ষেপের প্রভাবে চলতি মাসে ভারত কর্তৃক রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। তবে ভারত বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কনীতিকে ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক’ বলে আসছে। তাদের যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেখানে এখনো রুশ গ্যাস ও সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম আমদানি অব্যাহত রেখেছে, সেখানে ভারতের ওপর খড়গহস্ত হওয়া দ্বিচারিতা।

সাক্ষাৎকারে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে সামগ্রিক বাণিজ্যে সামান্য পতন দেখা দিলেও, মোটা দাগে আমাদের লেনদেন আগের মতোই স্থিতিশীল আছে। বিশেষ করে পেট্রোলিয়াম পণ্য ও অপরিশোধিত তেলের লেনদেন স্বাভাবিকভাবেই চলছে।”

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম লঙ্ঘনের বিষয়টি ইঙ্গিত করে পুতিন আশা প্রকাশ করেন যে, শেষ পর্যন্ত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই অনিয়মগুলো সংশোধন করা হবে। উল্লেখ্য, পুতিনের এই সফরে দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও বাণিজ্য খাতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।