২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেন তাদের প্রায় ৫ লাখ সেনা হতাহতের বলে দাবি করেছে রাশিয়া। মস্কোর ভাষ্যমতে, জনবলের এই বিশাল ক্ষতি পূরণ করা কিয়েভের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বোর্ড সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলৌসোভ। রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ওই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে বেলৌসোভ বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে বিপুল প্রাণহানির প্রভাবে ইউক্রেনের সামরিক শক্তি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতির কারণে দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে সেনাবাহিনীতে যোগদানের আগ্রহও কমে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, চলতি বছর ইউক্রেন শুধু জনবলেই নয়, সমরাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামেও অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, এ সময়ে ইউক্রেনের ১ লাখ ৩ হাজারের বেশি সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৫০০ ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান, যার বড় একটি অংশ পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তা হিসেবে পেয়েছিল কিয়েভ।
যুদ্ধের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে রাশিয়া পুনরায় জানিয়েছে, ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার জন্য কিয়েভের তৎপরতার জেরে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর ২০২২ সালে এই সামরিক অভিযান শুরু হয়।
যুদ্ধ শুরুর পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি এক ডিক্রির মাধ্যমে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। শুরুতে সেনাবাহিনীতে যোগদানের ন্যূনতম বয়স ২৭ বছর থাকলেও পরে তা কমিয়ে ২৫ বছর করা হয়। এদিকে গত এক বছরে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বাধ্যতামূলক সেনাসমাবেশ (মোবিলাইজেশন) ঘিরে সাধারণ মানুষ ও রিক্রুটমেন্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গেছে।
তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই পরিসংখ্যান ও দাবির বিষয়ে ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।




Comments