সুনামগঞ্জে কৃষকের মেয়ে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে মো. লিটন আহমদ ওরফে লিটন মিয়া নামের এক দিনমজুরকে দিয়েছেন সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ)। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুর পৌণে ১ টার দিকে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত লিটন মিয়া সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ভল্লবপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের খলিল আহমদের ছেলে ও পান্ডারগাঁও গ্রামের সুন্দর আলীর ভাড়াটিয়া।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে ২৮ এপ্রিল সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও গ্রামের কৃষক ফরিদ আহমদের স্ত্রী সাবিনা আক্তার ছোট মেয়ে প্রমি আক্তারকে নিয়ে বাবা বাড়ি দোয়ারাবাজার উপজেলার আমবাগি যোগিরগাঁও গ্রামের বেড়াতে যান। পরদিন ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় কিছুটা অসুস্থ বোধ করায় ফরিদ আহমদ মেঝ মেয়ে তমা আক্তার (১৮)কে বাড়িতে একা রেখে পান্ডারগাঁও বাজারে একজন পল্লী চিকিৎসকের কাছে যন। এর কিছু পরে তার ছেলে মিনহাজ (১৪) দৌড়ে এসে তাকে জানায়, তমা আক্তার রান্না ঘরে হাটু বাজ করা অবস্থায় ফাঁসির মতো ঝুলে রয়েছে। খবর পেয়ে দৌড়ে বাড়িতে এসে দেখেন তার মেয়ে তমা আক্তারের পরনের পাজামা খোলা, উরুতে দাগ রয়েছে। এসময় তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। এসময় গ্রামের ইউপি সদস্য দোয়ারাবাজার থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে পাঠায়। এসময় কৃষক ফরিদ আহমদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়নি। পরদিন ৩০ এপ্রিল অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে দোয়ারাবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন ফরিদ আহমদ। এরপর ফরিদ আহমদের মোবাইলের সূত্র ধরে দিনমজুর মো. লিটন আহমদ ওরফে লিটন মিয়াকে আসামি সনাক্ত করে পুলিশ আদালতে চার্জশীট দাখিল করে।
সুনামগঞ্জের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. শামসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে মানবকণ্ঠকে জানান, বাবা ও মা-সহ পরিবারের কেউ না থাকার সুযোগে প্রতিবেশীর ভাড়াটিয়া দিনমজুর মো. লিটন আহমদ ওরফে লিটন মিয়া কৃষক ফরিদ আহমদের দ্বিতীয় মেয়ে প্রমি আক্তার (১৮)কে জোরপূর্বক ধর্ষণের পর হত্যা করে।
সাক্ষ্য প্রমান শেষে বিজ্ঞ বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামি মো. লিটন আহমদ ওরফে লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে দ-বিধির ৩০২ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দোষীয় সাব্যস্তক্রমে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদ- প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সুনামগঞ্জের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. শামসুর রহমান এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট রাধা কান্ত সূত্রধর।




Comments