চট্টগ্রামের অপরাধ জগতের ত্রাস, তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ এবং তার স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না চাঞ্চল্যকর চারটি হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। তবে অত্যন্ত সুকৌশলে পুলিশ, প্রশাসন ও গণমাধ্যমের নজর এড়িয়ে দীর্ঘ সময় গোপন রাখা হয় এই জামিনের খবর। জামিন পাওয়ার প্রায় আড়াই মাস পর গত ৮ ডিসেম্বর জামিননামা চট্টগ্রাম আদালতে পৌঁছালে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তবে একাধিক হত্যা ও অস্ত্র মামলা থাকায় এখনই কারাগার থেকে মুক্তি মিলছে না তাদের।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর চান্দগাঁও থানার দোকান কর্মচারী শহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় এবং ১৮ আগস্ট পাঁচলাইশ থানার ওয়াসিম আকরাম হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পান সাজ্জাদ ও তামান্না। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানার আরও দুটি হত্যা মামলায় (দোকান কর্মচারী ফারুক ও আফতাব উদ্দিন তাহসীন হত্যা) তাদের জামিন মঞ্জুর হয়। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ সুমনের দ্বৈত বেঞ্চ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এসব জামিন আদেশ দেন।
অভিযোগ উঠেছে, জামিন আবেদনে কৌশল হিসেবে তামান্নার নাম ১ নম্বরে রাখা হয়েছিল যাতে নারী হিসেবে সহানুভূতি পাওয়া যায় এবং সাজ্জাদের কুখ্যাত পরিচয় আড়াল করা যায়। সাধারণত হাইকোর্টের জামিননামা এক সপ্তাহের মধ্যে কারাগারে পৌঁছালেও, এ ক্ষেত্রে প্রায় আড়াই মাস সময় লাগা এবং রাষ্ট্রপক্ষ থেকে চেম্বার জজ আদালতে জামিন স্থগিত না চাওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সাজ্জাদের আইনজীবী আবু বক্কর সিদ্দিক জামিনের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, হাইকোর্ট থেকে কাগজপত্র চট্টগ্রামে পৌঁছাতে কেন দেরি হয়েছে তা তার জানা নেই। অন্যদিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার শাহ সৈয়দ শরীফ জানান, সাজ্জাদের বিরুদ্ধে মোট ১৬টি মামলার নথি তাদের কাছে আছে, যার মধ্যে তিনটির জামিননামা এসেছে। আর তামান্নার চারটি মামলার জামিননামা পৌঁছেছে। বর্তমানে সাজ্জাদ রাজশাহী এবং তামান্না ফেনী কারাগারে বন্দী থাকায় কাগজপত্র সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ১০টি খুনসহ মোট ১৯টি মামলা রয়েছে। নগরীর বায়েজিদ, অক্সিজেন ও চান্দগাঁও এলাকায় ‘বুড়ির নাতি’ নামে পরিচিত এই সন্ত্রাসী হুলিয়া নিয়ে বিদেশে পলাতক বড় সাজ্জাদের অনুসারী ছিলেন। চলতি বছরের ১৫ মার্চ তাকে এবং ১০ মে তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। কারাগারে থেকেও অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ ও প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী সরোয়ার বাবলা হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযোগ ওঠার পর সাজ্জাদ ও তামান্নাকে চট্টগ্রাম থেকে ভিন্ন জেলার কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।




Comments