শীতের সবজিগুলোর মধ্যে শালগম অন্যতম পুষ্টিকর হলেও অনেকেই একে তেমন গুরুত্ব দেন না। অথচ সস্তা ও সহজলভ্য এই সবজিটি পুষ্টিগুণের দিক থেকে সুপারফুডের চেয়ে কম নয়। ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর শালগম শরীরকে সুস্থ রাখতে কীভাবে সাহায্য করে, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
শালগমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি' থাকে। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি বুস্ট করতে সাহায্য করে। শীতে সর্দি-কাশি বা ফ্লু থেকে বাঁচতে নিয়মিত শালগম খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
ওজন কমাতে সহায়ক
যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের জন্য শালগম একটি চমৎকার খাবার। এতে ক্যালোরি খুব কম থাকে কিন্তু ফাইবার বা আঁশ থাকে প্রচুর। ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং বারবার ক্ষুধা লাগে না।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
শালগমে থাকা পটাশিয়াম এবং ভিটামিন 'কে' হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়, যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
হজমশক্তি উন্নত করে
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, তাদের জন্য শালগম ঔষধের মতো কাজ করে। এর উচ্চ ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায়
শালগমে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম রয়েছে, যা হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে। বয়সের সাথে হাড় ক্ষয় বা অস্টিওপরোসিস রোগ প্রতিরোধে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
চোখ ও ত্বকের যত্ন
শালগমে থাকা ভিটামিন 'এ' এবং লিউটিন চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং ছানি পড়া রোধ করে। এছাড়া এর ভিটামিন 'সি' ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক
গবেষণায় দেখা গেছে, শালগমে থাকা গ্লুকোসিনোলেটস এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
সতর্কতা:
যাদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে বা কিডনিতে পাথরের সমস্যা আছে, তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বা পরিমিত পরিমাণে শালগম খাওয়া উচিত।
খাওয়ার নিয়ম:
শালগম কাঁচা সালাদ হিসেবে, ভাজি করে, মাছ বা মাংসের ঝোলে রান্না করে অথবা জুস হিসেবে খাওয়া যায়। শালগমের শাকও অত্যন্ত পুষ্টিকর, যা ভাজি হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
সুস্থ থাকতে এই শীতে আপনার খাদ্যতালিকায় অবশ্যই শালগম যোগ করুন।
Comments