Image description

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানা কম্পাউন্ডে যমুনা টিভির রিপোর্টার জোবায়েদ ইবনে শাহাদাতকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যায়িত করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আমিরুল ইসলাম মারধর করেছেন বলে জানা গেছে।

রোববার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানায় এ ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, গত শনিবার রাতে নগরের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে কনসার্টে ‘জয় বাংলা’, ‘শেখ হাসিনা’ স্লোগান দেওয়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। থানায় এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক জোবায়েদ। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তার রোষানলে পড়েন তিনি। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকেল ৪টায় নগরের কাজির দেউড়ি মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সাংবাদিকরা। এতে চট্টগ্রামে কর্মরত বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকরা অংশ নেন। হামলার নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে চট্টগ্রাম টেলিভিশন রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক (সিটিআরএন)। 

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের এ ধরনের হামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং সংবিধান ও নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল। তারা বলেন, সংবাদকর্মীরা সর্বদা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন-তাদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বক্তারা দ্রুত দোষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেয় চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ।

জানা যায়, চট্টগ্রামের জিইসি এলাকায় কনসার্ট ঘিরে সংঘর্ষ-ভাঙচুরের ঘটনার সংবাদ সংগ্রহে খুলশী থানায় যান যমুনা টিভির রিপোর্টার জোবায়েদ ইবনে শাহাদাত। সেখানে তিনি গ্রেপ্তারকৃতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। কিন্তু থানার কর্মকর্তারা এ কাজে বাধা দেন। এসময় বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে জোবায়েদ ও ক্যামেরাপার্সন আসাদুজ্জামান লিমনকে থানার সেকেন্ড অফিসারের কক্ষে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আমিরুল ইসলাম।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক জোবায়েদ গণমাধ্যমকে বলেন, কনসার্টে মারামারির ঘটনায় আটক ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে থানা কমপাউন্ডের মধ্যে কথা বলছিলাম। এমন সময় ডিসি এসে কথা বলার অনুমতি নিয়েছি কিনা জানতে চান। তখন এক পর্যায়ে তিনি আমার দুই গালে থাপ্পড় মারেন। আমি এমন আচরণের প্রতিবাদ করায় আমাকে থানার ভেতরে নিয়ে গিয়ে ফ্লোরে ফেলে লাথি ও কিলঘুষি মারেন। এসময় তিনি আমাকে ফ্যাসিস্ট বলে গুম করে ফেলার হুমকি দেন আর ‘বলেন, তুই ফ্যাসিস্ট, আমি তোরে মারি নাই। শয়তানকে মারছি।’ পরে অন্য পুলিশ এসে আমাকে সেভ করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে থানার সামনে তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ সমাবেশ করে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। 

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ডিসি আমিরুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।