Image description

রাজধানীর ফার্মগেটে দ্য ডেইলি স্টার ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ সম্পাদক ও সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি নূরুল কবীর। 

বৃহস্পতিবার রাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়ের সামনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চলাকালে তিনি সেখানে গিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করেন। 

নূরুল কবীর বলেন, আমি সম্পাদক পরিষদের সভাপতি হিসেবে সংবাদপত্র কার্যালয়ে হামলার খবর শুনে সেখানে গিয়েছিলাম। ডেইলি স্টারের সাংবাদিক সহকর্মীদের পাশে দাঁড়ানোকে আমি আমার নৈতিক দায়িত্ব মনে করেছি। তিনি বলেন, দুটি সংবাদপত্রের কার্যালয়ে হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ ধরনের ঘটনা দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর।

বৃহস্পতিবার রাতে জুলাইয়ের বিদ্রোহী নেতা শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়। এর মধ্যে গভীর রাতে একদল লোক কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে তারা রাস্তার অপর পাশে ডেইলি স্টার ভবনে গিয়ে হামলা করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, দেশের সংকটের মুহূর্তে গণমাধ্যম ও বরেণ্য সাংবাদিকের ওপর হামলা দেশবিরোধী অপচেষ্টা। 

সাবেক তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ‘অতি ডানপন্থি গোষ্ঠীর ফাঁদে পা না দিতে’ জনগণকে সতর্ক করে বলেন, জুলাই বা দেশপ্রেমের নামে সহিংসতা ও অরাজকতা আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এবং গণ অধিকার পরিষদও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে পরিকল্পিত নৈরাজ্য বলে অভিহিত করেছে।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এক বিবৃতিতে দ্রুত তদন্ত, দোষীদের শনাক্ত ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য চার দফা দাবি জানিয়েছে।

সাবেক সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ফিরোজ আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন, নূরুল কবীর শেখ হাসিনার অজস্র হুমকির মুখেও কোনোদিন সত্য কথা বলা বন্ধ করেননি। আজকে গণমাধ্যমের ওপর দঙ্গলবাজির প্রতিবাদে একাই ঘটনাস্থলে হাজির হয়েছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে ‘মুক্ত গণমাধ্যমের ওপর চরম আঘাত’ বলে উল্লেখ করেছে। 

ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। নূরুল কবীরের মতো প্রবীণ সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থি। তারা অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।