নখদন্তহীন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দেখতে চাই না : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

নাগরিক প্লাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণে সক্ষম একটি শক্তিশালী জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, “যে প্রতিষ্ঠান মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণ করতে পারে না, এমন একটি নখদন্তহীন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আমরা দেখতে চাই না।”
শনিবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে খসড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫ নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে নাগরিক সংলাপে এ কথা বলেন তিনি। এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ এই সংলাপের আয়োজন করে।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বিগত সরকারের সময়কার মানবাধিকার কমিশনের সমালোচনা করে বলেন, “আমাদের নখদন্তহীন ও মেরুদণ্ডহীন মানবাধিকার কমিশন উপহার দেওয়া হয়েছিল। আমরা এমন কোনো প্রতিষ্ঠান চাই না।” তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ভবিষ্যতে কোনো মেরুদণ্ডহীন ভালো মানুষকে এই কমিশনে বসিয়ে দেবেন না। যারা সৎ ও সাহসী, সরকারের সঙ্গে প্রয়োজনে লড়াই করতে পারেন, তাদের এই প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব দিন।”
অনুষ্ঠানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আইনের আওতায় আনতে হবে। কমিশনকে আয়নাঘর পরিদর্শনের এখতিয়ার দিতে হবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় মানবাধিকার আইন সংশোধন করতে হবে।” তিনি আরও জানান, কমিশনের তদন্ত ও বাস্তবায়নের পূর্ণ ক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটির জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকতে হবে।
তিনি আরও দাবি জানান, কমিশনের প্রধান হিসেবে সরকারের সাবেক আমলা বা রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ব্যক্তিদের নিয়োগ না দেওয়ার জন্য।
এই সংলাপে বিভিন্ন অংশীজন মানবাধিকার কমিশনের কাঠামোগত সংস্কার এবং এর কার্যকারিতা বাড়ানোর বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। সংলাপে জোর দেওয়া হয়, একটি স্বাধীন, শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক মানবাধিকার কমিশন গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষা ও প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব।
Comments