Image description

সারাদেশের সব সরকারি স্কুল এবং মহানগর ও জেলা-উপজেলা সদরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে শুক্রবার। বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারও ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্কুলে ভর্তির সুযোগ পাবেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর ভর্তি কমিটির সদস্য ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল জানান, শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। তিনি বলেন, 'ভর্তির সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করতে পারবে এবং টেলিটক প্রিপেইড নম্বরের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে পারবে।' এবার ভর্তির আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা।"

https://gsa.teletalk.com.bd ওয়েবসাইট থেকে আবেদন করা যাবে ৫ ডিসেম্বর বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত। আগেরবার অনলাইনে আবেদন ফি ১১০ টাকা থাকলেও এবার তা ১০টাকা কমানো হয়েছে।

লটারির সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ ডিসেম্বর। এরপর ১৭ থেকে ২১ ডিসেম্বর ভর্তি চলবে।

এবারও ভর্তির ক্ষেত্রে দুইটি অপেক্ষমান তালিকা ও ওয়েটিং লিস্ট থাকবে। ভর্তি কমিটি বলছে, ২২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর প্রথম ওয়েটিং লিস্ট থেকে এবং ২৭ থেকে ৩০ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ওয়েটিং লিস্ট থেকে শিক্ষার্থীরা ভর্তির পাবে।


নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলোর প্রধান শিক্ষকরা শূন্য আসনের তথ্য দিয়েছেন জানিয়ে ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও অধিদপ্তরের উপপরিচালক ইউনুস ফারুকী বলেন, মোট কতগুলো শূন্য আসনের তথ্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তা আমরা বৃহস্পতিবার বিকাল নাগাদ জানতে পারব।

স্কুলগুলোতে ভর্তি হতে আলাদা আলাদা আবেদন করতে হবে শিক্ষার্থীদের। অনলাইনে আবেদনে পাঁচটি স্কুল পছন্দক্রমে দিতে পারবেন। ডাবল শিফটের স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ হিসাবে দিলে দুইটি পছন্দক্রম গণ্য হবে।

সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের ভর্তি নীতিমালায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব স্কুলের প্রতি শ্রেণি শাখায় শিক্ষার্থী সংখ্যা হবে ৫৫জন। ভর্তি নীতিমালায় প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বয়স নির্ধারণে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ অনুসরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে কোন শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর, সর্বোচ্চ বয়স সাত বছর হলে তারা প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। বয়স নির্ধারণের জন্য অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে তবে। তবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ঢাকা মহানগরীর স্কুলগুলোর মোট শূন্য আসনের ৪০ শতাংশ সংলগ্ন ‘ক্যাচমেন্ট এলাকার’ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষণ থাকবে বলে ভর্তি নীতিমালা জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ঢাকা মহানগরীর বাইরের সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলোর জন্য এ সিদ্ধান্ত প্রযোজ্য হবে না।

নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের ৫ শতাংশ আসন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের ভর্তির জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে প্রার্থী পাওয়া না গেলে এসব আসনে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবেন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য এ দুই ধরনের স্কুলেই ২ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে।

আর লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ করে দিতে কাছের বেসরকারি স্কুলের ১ শতাংশ আসন সংরক্ষণের নির্দেশনা এসেছে নীতিমালায়।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দিতে সরকারি স্কুলগুলো ষষ্ঠ শ্রেণির ১০ শতাংশ আসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ভর্তি নীতিমালায়।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সন্তানের জন্য সরকারি-বেসরকারি স্কুলের ০.৫ শতাংশ আসন এবং অধীন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানের জন্য ০.৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে।

কোনো আবেদনকারী শিক্ষার্থীর যমজ ভাই বা বোন অথবা সহোদর কোনো সরকারি বা বেসরকারি স্কুলে আগে থেকে অধ্যয়নরত থাকলে তাহলেও ওই স্কুলে ভর্তি হতে আবেদনকারীর জন্য আসন সংরক্ষণ থাকবে। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর যমজ ভাই বা বোনের জন্য ২ শতাংশ আর অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর আবেদনকারী সহোদরের জন্য ৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে।

এ ছাড়া কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের ভর্তির উপযুক্ত সন্তানের জন্য ওইসব সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের অতিরিক্ত আসন সংরক্ষিত থাকবে। বয়েজ স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের মেয়ে সন্তান কাছের গার্লস বা সহশিক্ষা স্কুলে এবং গার্লস স্কুলে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের ছেলে সন্তান কাছের বয়েজ বা সহশিক্ষা স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে এ সুবিধা পাবেন।