সরকারের দেওয়া তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ডের প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এনইআইআর (ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার) সিস্টেম চালুর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে নিয়ে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মোবাইল ও গ্যাজেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ’ (এমবিসিবি)।
আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমবিসিবি জানায়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ব্যবসায়ীদের তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ড দেওয়ার স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই সময়ে ব্যবসায়ীদের নিরবচ্ছিন্ন পণ্য সংগ্রহ ও ব্যবসা পরিচালনার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল এবং জানানো হয়েছিল যে, এই সময়ে নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়া কোনো ডিভাইস ভবিষ্যতে বিচ্ছিন্ন করা হবে না।
সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর বিটিআরসি হঠাৎ করে মাত্র ১৫ দিনের সময় দিয়ে এনইআইআর চালুর ঘোষণা দেয়, যা সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সর্বশেষ ১ জানুয়ারি থেকে এনইআইআর চালুর ঘোষণার মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে। এমবিসিবির দাবি, এই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তের পেছনে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের স্বার্থরক্ষার বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে এমবিসিবির সভাপতি মোহাম্মাদ আসলাম বলেন, দেশের মোবাইল বাজার নিয়ন্ত্রণে এনে কয়েকটি সিন্ডিকেটভুক্ত প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া সুবিধা নিশ্চিত করতেই পরিকল্পিতভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এতে প্রায় ২৫ হাজার ব্যবসায়ী কোণঠাসা হচ্ছেন এবং লক্ষাধিক মানুষের জীবিকা ঝুঁকিতে পড়ছে।
তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ীরা এনইআইআরের বিরোধী নন; বরং সংস্কার করে এনইআইআর চালুর পক্ষে। বৈধভাবে কর পরিশোধ করে ব্যবসা করতে তারা আগ্রহী। এজন্য করের হার সহনীয় করা, নতুন ফোনের পাশাপাশি পুরাতন ফোন আমদানির নীতিগত বাধা দূর করার দাবি জানান তিনি।
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, যদি সরকারি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৩ মাসের গ্রেস পিরিয়ড নিশ্চিত না করা হয়, শুল্ক কাঠামো ও আমদানি বিষয়ে লিখিত ও স্পষ্ট সরকারি অবস্থান না আসে এবং সিন্ডিকেটমুক্ত নীতিগত সংস্কার দৃশ্যমান না হয়, তবে এনইআইআর কার্যক্রম শুরুর আগেই সারা দেশের মোবাইল ব্যবসায়ীরা কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।
মোহাম্মাদ আসলাম আরো বলেন, তফসিল ঘোষণার পর সরকারি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায়ভার ব্যবসায়ীরা নেবে না।
তিনি বলেন, আমরা সরকারের বা সংস্কারের বিরোধী নই। কিন্তু সিন্ডিকেটের স্বার্থে প্রতিশ্রুতি ভেঙে একটি পুরো খাত ধ্বংসের অপচেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। এখনো সময় আছে সরকার চাইলে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন ও সিন্ডিকেটমুক্ত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে।




Comments