Image description

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে বীরের বেশে দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক বিশাল গণসংবর্ধনা সমাবেশে তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে তাঁর আগামীর পথরেখা তুলে ধরেন। ভাষণে তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আধিপত্যবাদী শক্তির চলমান ষড়যন্ত্রের বিষয়ে কঠোর সতর্কবার্তা প্রদান করেন।

তারেক রহমান বলেন, “আধিপত্যবাদী শক্তির বিভিন্ন গুপ্তচরেরা এখনো নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যেকোনো উসকানির মুখে আমাদের অত্যন্ত ধৈর্যশীল হতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না। আমাদের লক্ষ্য একটি শান্ত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া।”

বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোকে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, “১৯৭১ সালে লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত এই মাতৃভূমি ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আধিপত্যবাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে এনেছিল। ঠিক একইভাবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা, কৃষক-শ্রমিক এবং সর্বস্তরের মানুষ দলমত নির্বিশেষে রাজপথে নেমে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছে।”

চব্বিশের আন্দোলনের শহীদ ওসমান হাদি এবং একাত্তরের শহীদদের স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, “ওসমান হাদিসহ যারা জীবন দিয়েছেন এবং যারা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে। সেই ঋণ শোধ করার একমাত্র উপায় হলো একটি বৈষম্যহীন ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। যেখানে মানুষ কথা বলার অধিকার পাবে, মেধা অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার পাবে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে পাবে।”

আগামীর নেতৃত্ব তরুণদের হাতে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তরুণ প্রজন্মকেই দায়িত্ব নিতে হবে যাতে দেশকে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো যায়। আপনারা পাশে থাকলে আমরা সেই কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হব।”

ভাষণের শেষে তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন, সবাই মিলে আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই—সবাই মিলে করব কাজ, গড়ব মোদের বাংলাদেশ।”

উল্লেখ্য, তারেক রহমানের এই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দর থেকে ৩০০ ফিট পর্যন্ত পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। দীর্ঘ দেড় দশক পর নেতার মুখে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন উপস্থিত লাখো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। শেষে তিনি দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত করেন।