শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাসমুক্ত এবং নারীর জন্য নিরাপদ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী শক্তি হিসেবে ইসলামী ছাত্রশিবিরকে ক্যাম্পাসগুলোতে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রধান দায়িত্ব পালন করতে হবে।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ছাত্রশিবিরের ‘সদস্য সম্মেলন’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে সারা দেশের সদস্যদের সরাসরি ভোটে ২০২৬ সেশনের জন্য ইসলামী ছাত্রশিবিরের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে।সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নুরুল ইসলাম সাদ্দাম এবং সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হয়েছেন সিবগাতুল্লাহ। নুরুল ইসলাম সাদ্দাম আগের কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল এবং তার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। নবনির্বাচিত সেক্রেটারি জেনারেল সিবগাতুল্লাহ সর্বশেষ কমিটির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ছিলেন।
সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ কিশোর মুনতাসির আলিফের বাবা সৈয়দ গাজিউর রহমান। অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের পরিবারের সদস্য, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী যোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ করে গত সপ্তাহে প্রয়াত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির বড় ভাই ওমর ফারুক এবং বিগত সরকারের আমলে গুম হওয়া শিবির নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ডা. শফিকুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আজকের এই মুক্ত বাংলাদেশ পেতে ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ত্যাগ তিতিক্ষা সইতে হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রনেতা আব্দুল মালেক থেকে শুরু করে সর্বশেষ বিপ্লবী শরীফ ওসমান হাদি অনেকেই দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে একসময় ছাত্রদের হাতে কলমের বদলে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল, ক্যাম্পাসগুলোকে বানানো হয়েছিল মিনি ক্যান্টনমেন্ট। সেই অন্ধকার অধ্যায় বিদায় নিতে শুরু করেছে। এখন শিক্ষাঙ্গনে যাতে আর কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রধান দায়িত্ব এখন ছাত্রশিবিরের। ২০২৪-পরবর্তী বাস্তবতায় শিবির কার্যত ছাত্রসমাজের অভিভাবকের মর্যাদা পেয়েছে।”
সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান, আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার উপস্থিত ছিলেন। আমন্ত্রিত রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন ও জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধানসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
আন্তর্জাতিক অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ফেডারেশন অব স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনস (IIFSO)-এর মহাসচিব ড. মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ, শ্রীলঙ্কা জামায়াতের মালিক জালালুদ্দিন, ইন্দোনেশিয়ার সংগঠন ‘কামি’-এর পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান রিদওয়ান আল-মুগোমিয়েরুভ এবং যুক্তরাজ্যের মুসলিম যুব নেটওয়ার্কের সভাপতি রিদওয়ান রাশিদ। তবে এই সম্মেলনে বিএনপি বা ছাত্রদলের কোনো প্রতিনিধিকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি।




Comments