Image description

দেশে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভালো নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেছেন, দেশে নির্বাচনের পরিবেশ অত্যন্ত খারাপ। এখন পর্যন্ত ভালো নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না। আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আমাদের তিনজন সংসদ সদস্য প্রার্থী বর্তমানে জেলে রয়েছেন। তারা জামিনে মুক্ত হলে আবারও জুলাই মাসের একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে রংপুর নগরীর স্কাইভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টি একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে এবং দলীয়ভাবে রেজুলেশন করে সেই আন্দোলনকে সমর্থন দিয়েছে। অথচ সেই জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের হত্যা মামলায় জেলে ঢোকানো হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি, তাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে ইচ্ছাকৃতভাবে জামিন দেওয়া হবে না। এটি হলে তা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী হবে এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের প্রশাসন ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা জুলাইয়ের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কমিশন সময় দিচ্ছে না। অথচ অন্য দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন দিনে দুইবার করে বৈঠক করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা নির্বাচনে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখছি না। প্রতিনিয়ত হ্যারাসমেন্টের শিকার হচ্ছি। তারপরও এই নির্বাচনকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার বিষয়টি আমরা প্রতিটি মুহূর্তে জনগণকে জানাব। জনগণই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি, তারাই আমাদের সমস্যা সমাধান করতে পারবে।

জিএম কাদের বিএনপির সঙ্গে জোটের বিষয়ে বলেন, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা উভয়েই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। একবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হলে জোট করার আর সুযোগ থাকে না। তবে আসনভিত্তিক সমঝোতা হতে পারে।

তিনি বলেন, যেখানে আমাদের দুর্বল প্রার্থী রয়েছে, সেখানে বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া যেতে পারে। আবার যেখানে জাতীয় পার্টির ভালো প্রার্থী আছে, সেখানে বিএনপি সমর্থন দিলে উভয় দলের প্রার্থীরা যদি জয়ী হন, তাহলে এমন সমঝোতার আলোচনা হতে পারে—যদি তারা চান এবং জাতীয় পার্টি সেটিকে সুবিধাজনক মনে করে। তবে এ বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি।

জাপার মহাসচিব বলেন, এবারের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র অত্যন্ত জটিলভাবে তৈরি করা হয়েছে। অধিকাংশ নতুন প্রার্থী এতে ভুল করতে পারেন, যার ফলে পরবর্তীতে তারা নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে পড়বেন। আমাদের আশঙ্কা, জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের বেআইনিভাবে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়াকে আইনসঙ্গত করার জন্য কমিশন বা সংশ্লিষ্টরা এ ধরনের কৌশল অবলম্বন করতে পারে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আজমল হোসেন লেবুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।